অর্ণব আইচ: এই প্রথম জামিন চাইলেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মামলায় বুধবার ভারচুয়াল পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও মহিলা জেল থেকে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Arpita Mukherjee) আদালতে পেশ করা হয়। এখনও পর্যন্ত ইডি ও সিবিআই আদালতে প্রত্যেক শুনানির দিনই পার্থবাবুর পক্ষে জামিনের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু এদিন তাঁর জামিনের আবেদন জানাননি পার্থবাবুর আইনজীবী শেখ সেলিম রহমান, কৃষ্ণচন্দ্র দাস ও সোমনাথ স্যান্যাল। অন্যান্য দিনের মতো পার্থর সঙ্গিনী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরও পক্ষে জামিনের আবেদন জানাননি তাঁর আইনজীবী নীলাদ্রি ভট্টাচার্য, সোহম বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জেলে আটকে রাখার বিরোধিতাও করেন তাঁরা।
গত কয়েকবার এক মাসের জন্য ‘অপা’কে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল ইডির বিশেষ আদালত। এদিন ইডির অন্য একটি বিশেষ আদালতে মামলা ওঠে। একসঙ্গে একমাস ‘অপা’কে জেল হেফাজতে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্য একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছেন। এর আগে বেসরকারি বিএড ও ডিএলএড কলেজগুলিকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা হয়েছিল, তার প্রমাণ মিলেছে। এবার তদন্তে জানা যায় যে, মোটা টাকা নিয়ে বেসরকারি আইন কলেজ, ফার্মেসি কলেজগুলিকেও এনওসি দেওয়া হয়েছে, যার সুবিধা পেয়েছেন পার্থ ও মানিক। কলেজগুলি ইচ্ছামতো ডিগ্রি দিয়েছে।
এই দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা যুক্ত, তাদের সন্ধান চলছে। বেসরকারি বিএড ও ডিএলএড কলেজগুলিকে এনওসি দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়টি মানিক জেলে থাকাকালীন সামনে আসে। এই ব্যাপারে পার্থকে জেলে জেরা করে বহু তথ্য মেলে। এদিন আরও ১৪ দিনের জন্য পার্থ ও অর্পিতাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তাঁদের ১৪ ডিসেম্বর ভারচুয়াল পদ্ধতিতেই তোলা হবে আদালতে। ইডি অভিযুক্তদের একটি সিডিতে মামলার যাবতীয় তথ্য জমা দিয়েছে বলে জানায়। অর্পিতার আইনজীবীর দাবি, অর্পিতা ওই সিডি জেলে গ্রহণ করেননি। তাঁর বৃদ্ধা মা মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চান। এই ব্যাপারে জেলের নিয়ম মেনে জেল সুপারকে আবেদন জানাতে বলেন বিচারক।
এদিন আদালতে বারবার তদন্তের অগ্রগতি ও চার্জশিটের পর কেন শুনানি শুরু হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পার্থ ও অর্পিতার আইনজীবীরা। এর উত্তরে ইডির আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এটা ডাকাতির মতো অপরাধ নয় যে, চার্জশিটের পর তাড়াতাড়ি শুনানি হবে। ডাকাতি করেও কেউ যদি বাইরে চলে যায়, সেই তদন্তও ২৪ ঘণ্টায় শেষ হয় না। এই ক্ষেত্রে অপরাধের টাকা কোথায়, কার কাছে গিয়েছে, সেই সম্পর্কে আরও তথ্য মিলছে। আরও তথ্য জানার প্রয়োজন। তাই তদন্তও চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.