ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হল ২৫ হাজার ৫৭২ জনের চাকরি। কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট মিলিয়ে এসএসসিতে (SSC) এই দুর্নীতির মামলা চলছে প্রায় ৪ বছর। প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে সেই ২০২১ সালে। তারপর চার বছরের টানাপোড়েন। একনজরে মামলার টাইমলাইন।
২০২১ সালের জুন মাস: তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি শুরু করেছিলেন।
২০২১ সালে ২২ নভেম্বর: গ্রুপ ডি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
২০২১ সালের ডিসেম্বর: সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রণজিৎ বাগের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান কমিটি গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি: প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গ্রুপ সি নিয়োগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। বাগ কমিটিকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২২ সালের এপ্রিল: সিবিআই নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলার তদন্ত শুরু করে।
২০২২ সালের ১৭ মে: হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগ বেআইনি বলে চিহ্নিত হয়। একাদশ-দ্বাদশ নিয়োগের তদন্তভারও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়।
২০২২ সালের ১৮ মে: বাগ কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ে আদালতে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।
২০২২ সালের ২২ জুলাই: গ্রেপ্তার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
২০২২ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর: প্রথম রিপোর্ট জমা দিয়ে সিবিআই আদালতে জানায় এসএসসিতে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বর-২০২৩ সালের মার্চ: অন্তত ৫ হাজার নিয়োগ বেআইনি বলে চিহ্নিত হয়। বাতিল হয় চাকরি।
২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর: এসএসসির সমস্ত মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্ট বিশেষ বেঞ্চ গঠন করার নির্দেশ দেয়। ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল: বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ SSC মামলার রায় দেয়। ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হয়। চাকরিহারাদের সুদ-সহ বেতন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল: হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চাকরিচ্যুতরা। পরে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
২০২৪ সালের ৭ মে: মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এরপর একাধিক দফায় মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫: সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শেষ। রায়দান স্থগিত। সিবিআই জানায়, কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল থাকুক। রাজ্য জানায়, একসঙ্গে এত শিক্ষকের চাকরি গেলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।
৩ এপ্রিল ২০২৫: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিল। সামান্য কিছু বদল করে হাই কোর্টের রায়ই বহাল রাখার সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতের। ফলে কর্মহীন হলেন ২৫ হাজার ৫৭২ জন। শুধু ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের চাকরি বহাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.