ফাইল ছবি
গোবিন্দ রায়: স্কুল শিক্ষিকাই হতে চান ধরনা মঞ্চের ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত সোমা। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) তরফে তাঁকে অন্য চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তিনি। অন্য কোনও চাকরি নয়, শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নে অনড় থাকার কথাই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জানান বীরভূমের তরুণী।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও চাকরি না পেয়ে বেশ কয়েকবছর ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী। ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তিন দফায় ৩৯৩ দিন ধরে আন্দোলন করে চলেছেন নবম-দশম শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিপ্রার্থীরা। ২০১৯ সালে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে এই চাকরিপ্রার্থীরা বেশ কয়েকমাস অনশন-আন্দোলনও চালান। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা সোমা দাসও।
ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত তরুণীর আন্দোলনে অংশগ্রহণের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে আদালত। আইনজীবী সুতনু পাত্র ও সুদীপ্ত দাসগুপ্তকে স্পেশ্যাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন স্পেশ্যাল অফিসারের সঙ্গে কথা বলে নিজের যাবতীয় সমস্যার কথা জানান ওই তরুণী। তার প্রেক্ষিতে এদিন আদালতে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে অন্য চাকরির প্রস্তাব দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তা ফিরিয়ে দেন সোমা।
তিনি বলেন, “আমি শিক্ষিকার চাকরিই করতে চাই। শিক্ষিকা হওয়া আমার স্বপ্ন।” এর প্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছে, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানাবে আদালত। পরে সোমা বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের মনে আশা জাগিয়েছেন। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। শিক্ষক পদের জন্যই আমরা পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। তাই শিক্ষকতাই করতে চাই। নিজে অন্য চাকরি নিয়ে এই আন্দোলন থেকে সরে যাব না।” আরও বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের হয়ে লড়ছেন। আমি চাকরিটা না নিয়ে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে বিচারপতিকে বলি, স্যর আমি আপনার পাশে আছি। যদি চাকরি হয়, সবার হবে, একসঙ্গে হবে। আমি সব হারিয়েছি, এটা হারাতে চাই না। আলাদা করে আমি চাকরিটা নিয়ে আমার ন্যায্য লড়াই থেকে সরে যেতে চাই না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.