সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মান্তাইদের এবার প্রথম জামাইষষ্ঠী। বিয়ে হয়েছে মাস ছয়েক আগে। বাপের বাড়ির অবস্থা একদমই সচ্ছ্বল ছিল না। লকডাউনের জেরে তাতে আবার আরও টানাটানি। কেউ রিকশা চালান কেউ আবার দিনমজুরের কাজ করতেন। লকডাউনের জেরে সব বন্ধ। তাহলে কি প্রথম জামাইষষ্ঠী হবে না মান্তাইদের? মন খারাপ ছিল ঘোষ এবং কর্মকার পরিবার-সহ বাঘাযতীন গাঙ্গুলিবাগানের বিদ্যাসাগর কলোনি এলাকার আরও ১০টি পরিবারের। শেষমেশ তাঁদের মুশকিল আসান হলেন সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ।
নাম পরিমল দে। লকডাউনে পাতানো বাবা মান্তাইদের। এবারে তাঁদের প্রথম জামাইষষ্ঠী। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে পরিমলবাবু নিজের হাতে করলেন বাজার। নেহাৎ কম নয়। তত্ত্বের আকারে গেল মেয়েদের বাড়ি জামাইষষ্ঠীর আয়োজনের বাজার। যেখানে অনেক জায়গায় এবার জামাইষষ্ঠী পালন হচ্ছে অনলাইনে। মান্তাইদের জামাইষষ্ঠীর আয়োজনে ছিল গোটা রুই মাছ, পাঁচ রকম ফল, আম-লিচু থেকে শুরু করে বাদ পড়েনি কোনও কিছুই। বাঁশকাঠি চালের ভাত, মাছের মাথার ডাল, পায়েস, দুধ, পাঁচ রকম ভাজা মিষ্টি। উপরি পাওনা স্যানিটাইজার ও মাস্ক। রীতি মেনেই হল প্রথম জামাইষষ্ঠী। রঙিন কাগজে মুড়ে সুন্দর করে ঠিক বিয়ের মতো তত্ত্ব পাঠালেন মান্তাইদের বাড়ি। বাড়ি বাড়ি ঘুরে আশীর্বাদ করলেন মেয়ে-জামাইদেরও। কখনও আবার উলু দিতেও দেখা গিয়েছে বৃদ্ধকে। উপহারস্বরূপ পরিমলবাবু মেয়ে-জামাইকে দিলেন গাছ। হাতজোড় করে জামাইদের কাছে আবেদন রাখলেন গাছগুলি লাগানোর জন্য।
এহেন পরিমলবাবু করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজের উদ্যোগে রাত জেগে নিজের হাতে তৈরি মাস্ক বিলি করেছেন। আমফানের পরবর্তী পরিস্থিতিতে সরবরাহ করেছেন পানীয় জল। লকডাউনে এলাকার সাফাই কর্মীদের সংবর্ধনা দিয়েছেন টাকার মালা দিয়েও। পরিমলবাবুর ইচ্ছে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাছগুলোকে কিছুটা যদি উনি ফেরত দিতে পারেন প্রকৃতিকে। সত্যি, এমন মানবিক উদ্যোগকে কুর্নিশ জানায় নাগরিক সমাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.