নব্যেন্দু হাজরা: সুগন্ধী বাসমতী চাল সারা বছর বিদেশে রপ্তানি করা হয়। অথচ এই বাংলারই আরেক সুগন্ধী ও সুস্বাদু চাল গোবিন্দভোগের ক্ষেত্রে তাতে বাধা রয়েছে। স্রেফ একটি নির্দিষ্ট কোডের অভাবে সারা বছর গোবিন্দভোগ চাল রপ্তানি করা যায় না। শনিবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সঙ্গে বৈঠকে সেই কোড দেওয়ার দাবি তুললেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এদিন উভয়ের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনায় উঠে এসেছে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তাঁর কাছে আর্জি জানান, কৃষক বিরোধী কোনও সিদ্ধান্ত যাতে কেন্দ্র না নেয়।
শনিবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বাংলার কৃষিক্ষেত্র নিয়ে একাধিক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার ৯.৮ শতাংশ বাংলার কৃষক হলেও এরাজ্যে মোট চাষযোগ্য জমির পরিমাণ গোটা দেশের মাত্র ২.৯ শতাংশ, যা অত্যন্ত নগণ্য। তারই মধ্যে উৎপাদনে দেশের এক নম্বরে রয়েছে বাংলা। কৃষিমন্ত্রীর দাবি, চাল, পাট, আলু উৎপাদনে দেশে এক নম্বর, ভুট্টায় ৫ নম্বর। উৎপাদনশীলতা এবং কৃষকের আয়বৃদ্ধিতে শীর্ষে এ রাজ্যে।
এদিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, ”গোবিন্দভোগ চাল যাতে সারা বছর রপ্তানি করা যায়, তার জন্য HSN কোড প্রয়োজন। ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে এই কোডের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই আবেদন এখনও মান্যতা পায়নি। এই চাল বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে রাজ্যকে। মাঝেমাঝে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অথচ বাসমতি চাল এই কোড পেয়েছে। তাই গোবিন্দভোগকেও এই আওতায় আনা হোক। তা বলেছি কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে। এই চালের সুবিধা হল, তা সারাবছর উৎপন্ন হয় জৈব চাষের মাধ্যমে।”
তথ্য দিয়ে অভিযোগের সুরেই কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের কৃষি বাজেট ৯৮০০ কোটি টাকা। কেন্দ্র কৃষি ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য যে টাকা দেয়, তার পরিমাণ রাজ্য বাজেটের ৫ শতাংশেরও কম। সার নিয়ে বঞ্চনার সুরও শোনা গেল শোভনদেবের গলায়। বললেন, ”রাজ্যের প্রাপ্য ভাগ ২০২১ সালে ছিল ৫ লক্ষ মেট্রিক টন। এখন সেটা কমিয়ে ১ লক্ষ ২৭ হাজার মেট্রিক টন দেওয়া হচ্ছে। যা মোটেই কাম্য নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.