অভিরূপ দাস: প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিশ্রামকক্ষে’ ঠিকা কন্ট্রোলারের অফিস খুলছেন কলকাতা পুরসভার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, “বিশ্রাম নয়, পুরসভা কাজ করার জায়গা।”
ঠিকা জমিতে দ্রুত লিজ ডিড দেওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়েছে নতুন অফিসের। ঠিকা জমিতে যাঁরা থাকেন, বাড়ি বানাতে এই লিজ ডিড তাঁদের প্রয়োজন। আগে ঠিকা জমিতে কোনও প্রজাকে বাড়ি নির্মাণ করতে হলে আইনি জটিলতার মুখে পড়তে হতো। ওই জমির কোনও ‘লিজ ডিড’ পেতেন না প্রজা। এখন তা পাওয়া যাচ্ছে ১৫ দিনে। লিজ ডিডের আবেদন করে ঘন ঘন ফোন আসছে পুরসভায়। সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই পুরসভায় এমন প্রায় পাঁচ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই আধিকারিকদের খতিয়ে দেখতে হচ্ছে ঠিকাজমির বাসিন্দাদের কাগজপত্র। ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে ঠিকা কন্ট্রোলার বিভাগের। ওয়ান উইন্ডো সিস্টেম চালু করে দ্রুত ঠিকা জমির বাসিন্দাদের হাতে দ্রুত লিজ ডিড তুলে দিতে চাইছেন মেয়রও। এর জন্য প্রয়োজন অফিসের। কোথায় খোলা হবে সেই নতুন অফিস? শুক্রবার কলকাতা পুরসভায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, রক্সি সিনেমা হলের উপর একটা গোটা ফ্লোর খালি পড়ে রয়েছে। ওখানেই অফিস হবে।
উল্লেখ্য, রক্সি সিনেমা হলের উপরে ওই ফ্লোর জুড়ে ছিল প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ‘রেস্টরুম’। ওখানে তিনি দুপুরে মাঝেমধ্যেই বিশ্রাম করতে যেতেন। এদিন ফিরহাদ হাকিম ঠিকা কন্ট্রোলার বিভাগের আধিকারিককে নির্দেশ দেন, “ওই জায়গাটাকে ভাল করে সাজিয়ে নিন। ওখানে কোনওদিন আমি বিশ্রাম নিতে যাব না।” প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথা উঠতেই এদিন পুরসভায় গুঞ্জন শুরু হয়। বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম বরাবরই ঢিমেতালে কাজের বিপক্ষে। এদিন রক্সি সিনেমা হলের উপরে প্রাক্তন মেয়রের রেস্টরুম বদল নিয়ে গুঞ্জন উঠলে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “মেয়রের আবার রেস্টরুম কি। পুরসভাটা একটা কাজের জায়গা। এখানে কি মেয়র বিশ্রাম নিতে আসেন!”
শুধু রেস্টরুম নয়। এদিন কেইআইপি নিয়েও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সময়কার চুক্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফিরহাদ। কেইআইআইপি বা কলকাতা এনভায়রোমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্টের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার একটি চুক্তি হয় প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আমলে। সে চুক্তি অনুযায়ী কলকাতা জুড়ে কাজ করছে কেইআইপি। সে কাজ নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছে পুরসভায়। এদিন ফিরহাদ জানিয়েছেন, “কেইআইপি-র কাজে মোটেও আমি খুশি নই। তাদের কাজের সিস্টেম অত্যন্ত খারাপ। চুক্তিটা তো আমার সময় হয়নি। শহরজুড়ে কেইআইপি-র যে কাজ হচ্ছে তাতে কন্ট্রাক্টর সংস্থার নিজেদেরই।”
মেয়রের অভিযোগ, “অনেক কন্ট্রাক্টর সময় অনুযায়ী কাজ শেষ করতে পারেনি। একজনকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। রাস্তার ঢাল যেদিকে হওয়া উচিৎ তিনি তার উল্টোদিকে করে দিয়েছেন। আমি তো মনে করি ওই কাজের জন্য কেইআইপি-র কনসালটেন্টকেও কালো তালিকাভুক্ত করা উচিৎ।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.