সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রিয় নেতাকে চিরবিদায় জানানোর পালা। আবেগ কি আর বাঁধ মানে? মানল না। আর তাই করোনা আবহে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর (Somen Mitra) শেষযাত্রায় জনসমাগম একটু বেশিই হল। ছিল না সামাজিক দূরত্ববিধি মানার ন্যূনতম সচেতনতাও। অবশ্য এমন দুঃসময়ে সেটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়ও।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চার জায়গায় শেষ শ্রদ্ধার পর বিকেলে নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির। পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন ৭৮ বছরের নেতা। আক্ষরিক অর্থেই মহাশূন্য তৈরি হল বঙ্গের ডানপন্থী রাজনীতির অন্দরমহলে। তবে তাল কাটল এক জায়গায়। বিধানসভায় সোমেন মিত্রর মরদেহ পৌঁছতে দেরি হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তাঁকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারেননি। সূত্রের খবর, মালা রেখে চলে যান তিনি।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মধ্য কলকাতার হাসপাতাল থেকে সোমেন মিত্রের মরদেহ নিয়ে সোজা বিধান ভবনের উদ্দেশে রওনা দেন কংগ্রেস কর্মী, সমর্থকরা। ছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য, সংগঠনের যুব নেতারাও ছিলেন। বিধান ভবনে দেহ পৌঁছতেই অপেক্ষারত অগণিত অনুরাগীরা ভেঙে পড়েন। সকলেই মরদেহে মাল্যদানের জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। বিধান ভবনে গিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনিও সেখানেই সোমেন মিত্রর নিথর দেহে সাদা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পরই ভিড়ের আড়ালে চলে যান। বামফ্রন্টের আরও বেশ কয়েকজন নেতাও বিধান ভবনে শ্রদ্ধা জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে। বিধান ভবনে ভিড় জমলেও, বিশৃঙ্খলতা সেভাবে দেখা যায়নি।
তবে বিধানসভা ভবনে সোমেন মিত্রর দেহ পৌঁছতেই ধরা পড়ল চরম বিশৃঙ্খলতার ছবি। সোমেন মিত্রর মরদেহ নিয়ে অজস্র বাইকবাহিনী ঢুকে পড়ে বিধানসভায়। হাই সিকিউরিটি জোনে থাকা এই ভবনের নিরাপত্তা রক্ষীরাও তাদের আটকাতে পারেননি। ফলে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়। দূরত্ববিধি শিকেয় ওঠে। তাতেই ক্ষেপে যান বিধানসভার অধ্যক্ষ। তাঁর উষ্মার মুখে পড়েন নিরাপত্তা কর্মীরা। ওই সময় গেটে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের শোকজের হুমকি দিয়ে তিনি তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন।
বিধানসভা থেকে সোমেন মিত্রর মরদেহ এরপর যায় তাঁর বর্তমান বাসভবন ৩, লোয়ার রডন স্ট্রিটে। প্রিয়জনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখান থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আদি বাড়ি অর্থাৎ ৪৫, আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মরদেহ। আত্মীয়, ঘনিষ্ঠদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ছবি: অরিজিৎ সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.