কৃষ্ণকুমার দাস: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে রাজ্যের শপিং মল ও বৃহৎ বিপণীগুলি গত একমাস বন্ধ। ফলে সেখানে থাকা অধিকাংশ স্ন্যাকস ও ড্রাইফুডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এবার সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার ও ওষুধ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির অভিযোগ উঠল অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে। এই মেয়াদ উত্তীর্ণ সামগ্রী থেকেই নতুন করে মহামারির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আশ্চর্যজনক তথ্য হল, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওই খাবারগুলি বিক্রির ক্ষেত্রে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট দামের চেয়ে কয়েক টাকা বেশি নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা!
কলকাতার কোন কোন পয়েন্টে নামী শপিংমলের ওই মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার ও ড্রাইফুডের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে তার বিস্তারিত তথ্য শনিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে আসে। অভিযোগ করেন জাভেদ নামে মেটিয়াবুরুজের এক বাসিন্দা। বলেন, “মেটিয়াবুরুজ থানায় ফোন করেছিলাম। পুলিশ আমার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর দিয়ে লিখিত জানাতে বলেছে।” তাঁর আশঙ্কা, সব তথ্য পেয়ে গেলে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাঁকে মেরে দেবে। বিষয়টি জানার পরই যুবকের থেকে পাওয়া তালিকা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে পাঠিয়ে ওই প্যাকেটজাত খাবার বাজেয়াপ্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন পুরমন্ত্রী। ফিরহাদের দাবি, “মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার প্যাকেট বিক্রি খুবই বিপজ্জনক। তাই সিপিকে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” রাজ্য পুলিশের কাছেও ইতিমধ্যে অভিযোগ এসেছে যে, জেলায় মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবারের প্যাকেটের পাশাপাশি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। মার্চ মাসে যে সমস্ত ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে সেগুলিই লকডাউনের সুযোগে এখন এক শ্রেণির অসাধু বিক্রেতারা রোগী বা তাঁর পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে বিক্রি করছেন। অনেক মানুষ না জেনেই সেগুলি কিনছেন।
বিস্কুট, ক্যাডবেরি থেকে শুরু করে বেবিফুড- একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর সব কিছুরই গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। অনেক খাবার প্যাকেটে থাকা সত্ত্বেও ছত্রাক জমে। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে প্যাকেটের ভিতরে। স্বভাবত এমন মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যাকেট শহরে নতুন করে আন্ত্রিকের প্রকোপ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। প্রসঙ্গত, শনিবার করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি রেশনকার্ডে খাবার বণ্টন নিয়ে এদিন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম। পরে ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে অংশ নেন। সেখানেই মেটিয়াবুরুজ থেকে জাভেদ খান নামে ওই ব্যক্তি ফোন করেন মেয়রকে। জানান, মেটিয়াবুরুজ এলাকার চার-পাঁচটি পয়েন্টে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার ও ড্রাইফুড বিক্রি হচ্ছে। কোন শপিং মল থেকে এই সমস্ত স্ন্যাকস এবং ফুডপ্যাকেট আসছে তাও উল্লেখ করেন। কারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তার বিস্তারিত তথ্যও দেন তিনি। রাজাহাট নামে একটি সেন্টারের নামও উল্লেখ করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.