সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বামেদের বনধ বিরোধিতায় ফের তৃণমূল মাঠে নামবে বলে জানালেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ বনধের দিনে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন ও তৃণমূল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে মহাসচিব অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের নামে কিছু অগণতান্ত্রিক লোক রাজ্যকে অচল করার চেষ্টা করছে৷’’
এদিন পার্থবাবু রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রতি হুংকার ছুড়ে বলেন, ‘‘শুক্রবার রাজ্যে সমস্ত অফিস-আদালত-ব্যাংক-কারখানা সবকিছুই খোলা থাকবে৷ কোনও কর্মী যদি বনধের দিনে উপযুক্ত কারণ ছাড়া ছুটি নেন, তাহলে তাঁর বেতন কেটে নেওয়া হবে৷’’
রাজ্যের জনজীবন স্বাভাবিক রাখার আরজি জানিয়ে এদিন তৃণমূলের সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নগুলিকে মাঠে নামার নির্দেশ দেন৷ গণপরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখাতে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেই এদিন আশ্বাস দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সরকারিভাবে বেশি সংখ্যায় বাস চালানোর সিদ্ধান্তের পাশাপাশি, বেসরকারি পরিবহণ কর্মীদেরও এদিন পথে থাকার আরজি জানান তিনি৷
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ও বামদের বনধ নিয়ে এদিন কড়া সমালোচনা করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ বলেন, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্রের নামে কিছু অগণতান্ত্রিক লোক রাজ্যকে অচল করার চেষ্টা করছে৷ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নষ্ট করছে৷’’ বামেদের একহাত নিয়ে এদিন মহাসচিব বলেন, ‘‘ওদের ৩৪ বছর রাজত্বে বাংলায় শুধুই বনধের সংস্কৃতি তৈরি করেছে৷ এখন এমনটা মেনে নেওয়া যাবে না৷’’
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগাতার সন্ত্রাস চালানো ও সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে শুক্রবার ছ’ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বামফ্রন্ট৷ বামেদের এই বনধ রুখতে এবারও নবান্ন থেকে কড়া নির্দেশ এসেছে৷ রাজ্যে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ রাজ্যের সমস্ত জায়গায় পুলিশি নিরপত্তা আরও কড়া করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ প্রত্যেকটি কিয়স্কে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রাখার কথাও বলা হয়েছে৷ শহরের একাধিক জায়গায় পুলিশ পিকেট বসানোর নির্দেশ পাঠানো হয়েছে৷ যাতে, বনধের দিনে ঝামেলা এড়ানো যায়৷ বাস, ট্রাম ডিপো, মেট্রো স্টেশন, ফেরিঘাটগুলির উপর পুলিশি নজরদারির মধ্যে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর৷ পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপে শহর অথবা রাজ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাস্তায় গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলেও জানা গিয়েছে৷ লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে দিনভর নজরদারি চালানো হবে বলেও কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে৷
গোলযোগের কোনও সম্ভাবনা দেখতে পেলেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে পুলিশকে৷ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বনধের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বনধের সংস্কৃতি যে তিনি আজও সমর্থন করেন না, সেকথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেইজন্যই রাজ্যকে সচল রেখেই তিনি প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে চান৷ বুধবার সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী বনধ নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন৷ সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘রাজ্যে কোথায় কোনও বনধ হবে না৷ রাজ্যের ৩৪ বছর ধরে বনধ-অবরোধ ছাড়া আর কী করছে সিপিএম? ওদের লজ্জা নেই৷ সংগঠন নেই, কর্মী নেই৷ তারপরও বনধ ডাকছে৷ সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি একসঙ্গে বনধ ডেকেছে৷ শুনে রাখুন, ওই সব বনধ-টনধ হবে না৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.