স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে তিনি লাগাতার সরব। এমনকী রাজ্যের প্রকল্পের টাকা না দেওয়ার জন্য দিল্লিতে বিজেপি নেতারা দরবার করছে বলে অভিযোগ তাঁর। এবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বললেন, রাজ্যের ইস্যুতে বিরোধীরাও দিল্লিকে বলুক। কখনও তিনি মানুষের স্বার্থে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বললেন। কখনও আবার উন্নয়নের প্রশ্নে সবাইকে পাশে থাকার আহ্বান জানালেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “কেউ কেউ পলিটিক্যালি আমায় গবেট ভাবতেই পারে। আমার কিছু করার নেই।” সেই নিয়েই এখন চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আচমকাই যান মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন থেকে রাজভবন হয়ে আচমকাই ঢুকে পড়েন বিধানসভায়। কক্ষে তখন বাজেট বক্তৃতা করছিলেন খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী রথীন ঘোষ (Rathin Ghosh)। মন্ত্রীর বক্তৃতা শেষে মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি রাজভবনে গিয়েছিলেন। ভাবলাম, বিধানসভা চলছে। একবার ঘুরে যাই। সবার সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে।’’ বাম জমানার রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) থেকে শুরু করে রাজ্যে ধানচাষ এবং পোস্ত চাষ নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন মমতা।
বক্তৃতার মাঝেই ‘পলিটিক্যালি গবেট’ প্রসঙ্গ আনেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মিডলম্যানদের থেকে চাষিদের বাঁচাতেই আমরা সরাসরি ধান কিনে নিই চাষিদের থেকে। কৃষকজমির মিউটেশন ফি আমরা মকুব করে দিয়েছি। বিমার জন্য আগে বাংলার কৃষকদের ৭০০ কোটি টাকা দিতে হত। এখন এক টাকাও দিতে হয় না। সবটাই আমরা দিই। ১৮-৬০ বছর বয়সের মধ্যে একজন চাষি মারা গেলে তাঁর পরিবার ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পায়। এইরকম অনেক কিছু করা হয়েছে।’’ আমরা মনে করি, আমাদের কৃষকরা ভাল আছে। চাষিদের আয় তিনগুণের বেশি বেড়েছে।’’ মমতা মনে করিয়ে দেন, আয়লার মতো ঝড়, বৃষ্টি-বন্যায় জমির ধান অনেকসময় ডুবে যায়। ফসল নষ্ট হয়। যার সমাধানও রাজ্য সরকার করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘আমাদের গবেষকরা এই সমস্যার সমাধান করেছেন। বুদ্ধিটা আমি দিয়েছিলাম ওদের। প্রতিবার সুন্দরবন, দিঘাতে ধান নষ্ট হচ্ছে। যদিও আমরা ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি। কিন্তু ধান তো নষ্ট হচ্ছে। এখন নোনাস্বর্ন ধান বের করা হয়েছে।’’ এরপরই বিরোধীদের লক্ষ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ কেউ পলিটিক্যালি আমায় গবেট ভাবতেই পারে। আমি গবেট, লকেট নই। আমি তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নই। গণতন্ত্রে সবাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তার কোনও মানে নেই। কিন্তু আমার কিছু করার নেই।”
মুখ্যমন্ত্রীর মুখে হঠাৎ ‘পলিটিক্যালি গবেট’ শব্দটি শুনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। ঠিক কাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য সেটা অবশ্য স্পষ্ট নয়। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মুখ্যমন্ত্রীর সাফল্য অগণিত। দীর্ঘদিনের সাংসদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর রাজনৈতিক বোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলার বোকামি হয়তো কোনও বিরোধীই করবে না। তাহলে কি তিনি ঘুরিয়ে ডিএ নিয়ে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের বার্তা দিতে চাইলেন? ঘটনাচক্রে আজই ডিএ (DA) নিয়ে আন্দোলনকারীরা বনধ ডেকেছে রাজ্যজুড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.