ছবি: প্রতীকী
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমগুলিতে ন্যূনতম পরিষেবা না পেয়ে অ্যাজমা রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে। গত কয়েকদিনে এমআর বাঙুর-সহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে পরপর কয়েকজন রোগীর মৃত্যুর পর এমনই অভিযোগ চিকিৎসকদের। রোগীর পরিজনদেরও অভিযোগ, বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে সামান্য পরিষেবাও পাননি অসুস্থ ব্যক্তিটি। তার আগেই সন্দেহভাজন করোনা রোগী হিসাবে রেফার করা হয়েছে সরকারি হাসপাতালে। আর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁদের পরিষেবার দেওয়ার সুযোগই পাননি। তার আগেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছেন ওই ব্যক্তি।
গত কয়েকদিনে এমআর বাঙুর হাসপাতালে বেশ কয়েকজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে, যাঁরা COVID-19 এ আক্রান্ত হননি। তবে তীব্র শ্বাসকষ্ট ও জ্বর ছিল। ঘটনা হল, এই রোগীদের এমন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল যে তাঁদের চিকিৎসা করার কোনও সুযোগই পাননি ডাক্তাররা। এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক আলোকগোপাল ঘোষ বলেন, “কোনও ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট, জ্বর বা ফ্লু-এর উপসর্গ থাকলেই তিনি করোনা আক্রান্ত, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভাল করে পর্যবেক্ষণ ও যন্ত্রণার উপশমের পর যদি মনে হয় করোনা আক্রান্ত, তবে সরকারি হাসপাতালে রেফার করা যেতেই পারে। নয়তো নার্সিংহোমে চিকিৎসা করা যায়।”
চিকিৎসকদের বক্তব্য, করোনা আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট ও জ্বর হয়। তবে এটাও ঘটনা সিওপিডি বা অ্যাজমার রোগীরাও জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভোগেন। তাই প্রথমেই করোনা আক্রান্ত বলে সিদ্ধান্ত না নিয়েই অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া অত্যন্ত দরকার। ডাঃ আলোকগোপাল ঘোষালের কথায়, “চিকিৎসকদেরও ভয়কে জয় করে চিকিৎসা করতে হবে। ‘প্রিটেস্ট প্রোবাবালিটি’ অর্থাৎ করোনার লক্ষণ মনে হলে তখনই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য পাঠানো উচিত।”
আলোকগোপালবাবুর মতোই অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটাল অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সহ-সভাপতি রূপক বড়ুয়াও একই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “ভয়কে জয় করেই করোনার চিকিৎসা করতে হবে। শুরুতেই কোনও জ্বর, শ্বাসকষ্টের রোগীকে নোভেল করোনা আক্রান্ত বলে সরকারি হাসপাতালে না পাঠিয়ে সুস্থ করতে হবে।” রূপকবাবুর কথায়, “প্রয়োজনে হাসপাতালগুলিতে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড করে শ্বাসকষ্টের রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে পাঠানো যেতে পারে।” তবে প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে শেখ আলহাজুদ্দিন অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, করোনা এবং লকডাউনের ফলে জেলার বেশিরভাগ নার্সিংহোমে
অন্য উপসর্গের সমস্যা নিয়ে রোগী ভরতি বন্ধ হয়েছে। তাই শ্বাসকষ্ট বা জ্বর নিয়ে রোগী আসছেই না।” তবে এমন ঘটনা না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.