ফাইল ছবি।
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সিপিএমে দলের নাম ভাঙিয়ে দু-একজন যুব নেতা রোজগার করছেন ইউটিউবের মানিটাইজেশন থেকে! যা নিয়ে দলের যুব নেতৃত্বের সেই অংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দলের রাজ্য কমিটিতেও পৌঁছেছে তার আঁচ, যাকে ঘিরে বিতর্ক সিপিএমে। মূলত মুখপাত্রদের দু-একজনকে নিয়ে নতুন এই টানাপোড়েন সিপিএমে। দলের তরফে বিভিন্ন মুখপাত্র বিভিন্ন চ্যানেলে যাচ্ছেন। কখনও কোনও পথসভা বা জনসভাতেও যাচ্ছেন। এই নিয়েই দলের মধ্যে ভয়ংকর এক আলোচনা উঠে এসেছে।
সিপিএম সূত্রে খবর, যুব এই মুখপাত্রদের কয়েকজনের মধ্যে একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে যে, সেই বক্তাদের দু-তিনজন বাছা বাছা কিছু সংলাপ ঠিক করে যাচ্ছেন। যেখানে আপাতদৃষ্টিতে গভীরতা না থাকলেও কিছু চমক রয়েছে। তাঁরা টিভিতে গিয়ে সেই কথাগুলো বলছেন, আবার জনসভাতেও একই সংলাপ আওড়াচ্ছেন। ঠিক সেই সেই অংশগুলোই বেছে নিয়ে তাঁরা আবার সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে একটা বড় রকমের রোজগার করছেন। এই নিয়েই পার্টিতে কথা উঠেছে।
প্রশ্ন উঠেছে যে, সেই ইনকাম তাঁরা পার্টিতে জমা দেবেন না কেন? কেনই বা তাঁরা পার্টিকে সেই ইনকামের কথা জানাবেন না? দলে পদাধিকারী যাঁরা বা আবেগ দিয়ে দলটা যাঁরা করেন, তাঁদের নিয়ে সমস্যা নেই। অথচ, পার্টির সঙ্গে জড়িত হোল টাইমার কয়েকজন এমন আছেন, সমস্যা তাঁদের নিয়েই। যাঁরা এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সেই অংশের যুক্তি, এই ইনকাম তো ওই বক্তার একক কৃতিত্বে হচ্ছে না। দলের হয়ে তিনি বলার সুযোগ পাচ্ছেন। এই নিয়ে দলের যুব মহলে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তা পৌঁছেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট পর্যন্ত। পৌঁছেছে নালিশের আকারেই। দলের এক যুবনেতা তথা মুখপাত্রের ক্ষোভ, “তার মানে তো পার্টিকে ভাঙিয়ে ঘুরপথে যাঁরা সহ-কমরেডদের বঞ্চিত করে টাকাটা তুলছেন, তাঁরা একরকম তোলাবাজি করছেন।”
নালিশের যুক্তিতে বলা হয়েছে, পার্টির হয়ে বক্তারা যা বলেন সেগুলো তো ভলান্টারি সার্ভিস, অর্থাৎ দলের হয়ে শ্রমদান। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এটা থেকে আলাদা ইনকাম করছেন কোনও কোনও মুখপাত্র। তাহলে সেটা তাঁদের ইনকাম হিসাবেই শো করিয়ে পার্টিতে সেই টাকা জমা দেওয়া হবে না কেন? এক যুব নেতার বক্তব্য, “পার্টি যদি কাউকে মুখপাত্র হিসাবে পাঠায়, তাহলে কি সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ইনকাম হয়? তবে বাকিদেরও পাঠানো হোক।” দেখা যাচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউবের মানিটাইজেশন থেকেই ইনকামটা হচ্ছে। যুবদের মধ্যে একাধিক অংশ থেকে এই বক্তব্য পার্টির রাজ্য কমিটির একাধিক সদস্যের কাছে পৌঁছেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা জানাবেন। এই ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে নেতৃত্বের তরফে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.