অর্ণব আইচ: CAA নিয়ে বিভিন্ন জেলায় গোলমালের পিছনে ইন্ধন জুগিয়েছেন প্রায় ৫৫ জন। তাঁদের শনাক্ত করলেন কলকাতা ও রাজ্যের গোয়েন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ইন্ধন জোগানো হয়েছে বলে অভিযোগ গোয়েন্দাদের। তালিকা তৈরি করে ইতিমধ্যেই নজরদারি শুরু হয়েছে তাঁদের উপর।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, CAA নিয়ে গোলমাল শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে থেকেই কয়েকটি সংগঠনকে মাথা চাড়া দিতে দেখা গিয়েছে, যেগুলিকে এর আগে বিশেষ দেখা যায়নি। এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় CAA ও NRC বিরোধী প্রচুর মন্তব্য ও পোস্ট ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল ওই সংগঠনের মাধ্যমে। তার মধ্যে কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যে অতি বামেরা যুক্ত, তা-ও জানতে পারেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা এমন কিছু নামও পেয়েছেন, যাদের নাম একসময় উঠে এসেছিল ‘শহুরে মাওবাদী’র তালিকায়। কলকাতায় মাওবাদীদের সিটি কমিটির শিরদাঁড়া ভেঙে যাওয়ার পর তাদের অনেকেরই কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু CAA ইস্যু ঘিরে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে আসে তাদের নাম।
গোয়েন্দাদের মতে, বিভিন্ন জেলায় গোলমালের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। এমনকী, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও তৈরি হয়েছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, একটি বিশেষ সংগঠনের কলকাতার কয়েকজন নেতা কয়েকটি জেলায় গোলমাল করার জন্য যে ইন্ধন জুগিয়ে গিয়েছেন, সেই বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। আরও কয়েকটি সংগঠনের নেতারা তাঁদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন বলে খবর ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। আর এই ইন্ধনে ঘি ঢালে প্রচুর গুজব, যেগুলি ছড়ানো হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই।
ইতিমধ্যেই কলকাতা ও রাজ্যের গোয়েন্দারা সোশ্যাল মিডিয়ার উপর শুরু করেছে কড়া নজরদারি। যে ৫৫ জন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকে গোয়েন্দারা শনাক্ত করেছেন, তাঁদের একটি বড় অংশই কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। একটি অংশ রয়েছে বিভিন্ন জেলায়। ইতিধ্যেই সেই নেতাদের উপর শুরু হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। তাঁদের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁরা এখনও কোনওভাবে গোলমালে মদত দিচ্ছেন কি না, দেখা হচ্ছে সেই বিষয়টিও। এমনকী, কোন সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে কারা রয়েছেন, সেই বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে, লালবাজারের কর্তাদের নির্দেশে শহরের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকরা যোগাযোগ রাখছেন। নজর রাখা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ গুজব ছড়াচ্ছে কি না। কলকাতার চারটি ডিভিশনে দিন ও রাতে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী রাখা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, কোনওরকম পথ অবরোধ ও ভাঙচুর বরদাস্ত করা হবে না। কোনওভাবেই যাতে কলকাতায় গোলমাল ছড়ানোর জন্য কেউ ইন্ধন না জোগায়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.