Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিকল স্মার্ট কার্ড গেট, জোড়া-তাপ্পি ফর্মুলায় নাভিশ্বাস মেট্রোর যাত্রীদের

নির্বিকার মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ...

smart card gate of metro rail kolkata is not working properly
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 19, 2017 5:03 am
  • Updated:September 23, 2019 3:31 pm  

নব্যেন্দু হাজরা: সকাল সাড়ে ন’টা। ভিড়ে ঠাসা মেট্রো থেকে নেমে প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার জন্য স্মার্ট কার্ডের গেটে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন রূপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কার্ড পাঞ্চ করার আগেই দেখলেন বিকল গেট। অগত্যা! ফের পাশের গেটে লাইনে দাঁড়ালেন। যখন ছুটতে ছুটতে স্টেশন ছাড়লেন তখন অলরেডি ২০ মিনিট লেট।

মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের জোড়া-তাপ্পির ফর্মুলায় নাভিশ্বাস উঠছে মেট্রোযাত্রীদের। আগে ছিল শুধু ব্যাগেজ স্ক্যানার আর ডিএফএমডি গেট খারাপ। কিন্তু মাস কয়েক ধরে প্রায়ই বিগড়াচ্ছে মেট্রোর স্মার্ট কার্ড গেটও। যে স্টেশনে যাত্রীচাপ বেশি, সেখানেই অচল হয়ে যাচ্ছে বিদেশি এই গেট। মেট্রোয় কিছু স্টাফকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই গেট মেরামত করা হচ্ছে বটে, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের তাও বিগড়াচ্ছে। হয়রানি বাড়ছে যাত্রীদের।

Advertisement

কিন্তু কেন এই হাল? মেট্রো রেল সূত্রে খবর, যে সংস্থা এই ব্যাগেজ স্ক্যানার, ডিএফএমডি গেট, স্মার্ট কার্ড গেট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল, তারা অনেকদিন আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে। নতুন কোনও সংস্থা দায়িত্ব নেয়ও নি। মেট্রোরই কয়েকজন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই গেট মেরামতের কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু আধিকারিকদের বক্তব্য, এই কর্মীরা কেউই পুরোপুরি প্রশিক্ষিত নন। তাই জোড়া-তাপ্পি মেরে কোনওমতে কাজ চলছে। ফের তা বিগড়াচ্ছে।

[বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কংগ্রেসের নয়া সভাপতি হচ্ছেন রাহুল গান্ধী!]

সূত্রের খবর, নানা কারণে এই গেট বিকল হয়। প্রথমত যাত্রীচাপ বেশি পড়লে গেটের সেনসর গরম হয়ে যায়। ফলে তা কাজ করতে চায় না। আটকে যায়। দ্বিতীয়ত, দিনে বহুবার ওই গেটগুলোকে খুলে টোকেন বের করতে হয় কর্মীদের। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় টোকেনে ঘাটতি। বার বার গেট খোলার ফলে মাঝেমধ্যেই বিগড়োয় তা। তৃতীয়ত, ওই গেট খারাপ হলে সেটিকে ঠিক করতে যে সমস্ত যন্ত্রের প্রয়োজন, তাও এখানে পাওয়া যায় না। ফলে ঠিকঠাক সারানোও হয় না। মেট্রোর আধিকারিকরাই জানাচ্ছেন, আগে মেট্রোয় ছ’লক্ষ যাত্রী চলাচল করত। এখন তা সাত লাখ ছুঁচ্ছে। কিন্তু গেটের সংখ্যা তো বাড়েনি। ফলে গেটে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। আর তাতেই বিগড়াচ্ছে এই স্মার্ট কার্ড গেট।

দিনে গড়ে অন্তুত ১০-১৫ টি গেট বিকল হয়। কোনওমতে সারাই করে চলে কাজ। ফের কিছুদিনের মধ্যে আবারও বিকল হয়। যাত্রীদের অভিযোগ, অনেক সময়ই গেট খারাপ থাকায় রেলপুলিশ পাশের রেলিং খুলে দেন। ফলে কার্ড পাঞ্চ না করেই অনেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু পরে যখন কার্ড পাঞ্চ করতে যান, তখন হয় না। টিকিট কাউন্টারে গিয়ে সেই লক খোলাতে উপরি খসে ২৫ টাকা। এই সমস্যা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। দিন দিন তা আরও বাড়ছে। এমনটাই অভিযোগ যাত্রীদের।

[বিজেপির পতাকা হাতে নিলে মিলবে না সরকারি ফ্ল্যাট, ফতোয়া বিধায়কের]

শুধু কি এই স্মার্ট কার্ডের গেট! আধিকারিকরাই জানাচ্ছেন, নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার নামে সাজিয়ে রাখা ব্যাগেজ স্ক্যানারে শুধু ধুলো আর মাকড়শার জাল। কারণ তা কাজ করে না দীর্ঘদিন। এক-আধটা স্টেশনে নয়। ২৩টা স্টেশনেই এক চিত্র। বার বার টেন্ডার করেও স্ক্যানার সারানোর লোক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুখে সেগুলি কোথাও কভারে ঢাকা। কোথাও তাতে হেলান দিয়ে গল্পে মশগুল কর্মীরাই। বেশ কিছু স্টেশনে তো ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেকটর (ডিএফএমডি) খারাপ অবস্থায় পড়ে আছে।

যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘটা করে বছর চারেক আগে মেট্রোয় চালু হয়েছিল ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম। প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয় করে বসেছিল ব্যাগেজ স্ক্যানার, সিসিটিভি, ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেকটর। কিন্তু গালভরা নামই সার। বছর না ঘুরতেই মুখ থুবড়ে পড়ে এই ব্যবস্থা। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যখনই মেট্রোর গেট বিকল হয় সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা আছে। লোক গিয়ে গেট ঠিক করেন। তাছাড়া নিয়মিত আমাদের রিপোর্ট করতে হয় কতগুলি গেট খারাপ হয়েছে, না হয়েছে। গেট বিকল হওয়ার আটকাতে আরও দৃষ্টি দেওয়া হবে।”

[ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী রাজ্য, সোমবার থেকে মিলবে ৬ টাকায়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement