রমেন দাস: আইনি জটে ফেঁসে যোগ্যতা সত্ত্বেও মেলেনি প্রাপ্য চাকরি। প্রতিবাদে এক হাজার দিনেরও বেশি রাস্তায় কেটেছে। নিয়োগের দাবিতে পথে বসেই নিজের দীর্ঘ কেশরাশি বিসর্জন দিয়েছেন SLST আন্দোলনকারী রাসমনি পাত্র। এর পরই প্রতিবাদীদের সমস্যার সমাধানে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে বৈঠকের ডাক দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সোমবার বিকাশ ভবনে SLST চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রায় দু ঘণ্টা ধরে আলোচনা সারলেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের তরফে উপস্থিত ছিলেন কুণাল ঘোষও (Kunal Ghosh)। তিনিই জট কাটিয়ে দুপক্ষকে আলোচনায় বসানোর মূল কাণ্ডারি। আর এদিনের বৈঠক যে চাকরিপ্রার্থীরা বেশ খুশি, তা বোঝা গেল তাঁদের কথাতেই। সকলেই জানালেন, সরকার পক্ষের কার্যকরী ভূমিকা দেখে তাঁরা আশাবাদী, জট কেটে দ্রুত নিয়োগ হবে। পরবর্তী বৈঠক আগামী ২২ তারিখ।
সোমবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন SLST আন্দোলনকারীদের ৭ প্রতিনিধি। ছিলেন শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন, শিক্ষা দপ্তরের ল অফিসার, স্বাক্ষরতা মিশনের শুভ্র চক্রবর্তী, এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষ। দেড় ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর আন্দোলনকারী মতিউর রহমান বলেন, ”দীর্ঘ ১৬ মাস পর আলোচনা হল। আমরা জানতে চেয়েছিলাম, নিয়োগে বাধা কোথায়? কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে একটা যোগাযোগের সমস্যা ছিল। আইনি জটিলতা কাটানোর চেষ্টা ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী আইনি জটিলতা কাটিয়ে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে বলছেন। ৫৫৭৮ জনকে নিয়োগের ব্যবস্থা হবে। সরকার কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে। আমরা আশাবাদী যে এই পথে চললে খুব দ্রুত নিয়োগ জট কেটে যাবে।
দেখুন ভিডিও:
চাকরি চেয়ে চুল বিসর্জন দেওয়া রাসমনি পাত্র বলেন, ”প্রত্যেকেই কোথায় জট, কোথায় সমস্যা? সেটা জানতে পেরেছি। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দ্রুত নিয়োগ হবে। আগামী ২২ তারিখ আমরা জানতে পারব কী ফল হল। আশা করছি, মাননীয়ার উদ্যোগে আমরা দ্রুত স্কুলে ফিরব। আমাদের জীবন বাঁচবে।” আরেক চাকরিপ্রার্থী পলাশ মণ্ডলের কথায়, ”মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যত জটিলতা আছে সব কাটিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে। আপ্রাণ চেষ্টা করছে সরকার। স্কুল সার্ভিস কমিশন আর শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে এই জটিলতা কাটার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।”
চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কুণাল ঘোষ। বৈঠক শেষে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ”মুখ্যমন্ত্রী চান, অভিষেক চান জটিলতা কাটুক। কিছু জটিল জায়গা রয়েছে। আইনের মাধ্যমে কাটাতে হবে। ওঁরা দাবি রাখছিলেন, সরকারের কিছু বাধ্যবাধকতা ছিল। আজকের বৈঠক ইতিবাচক, ফলপ্রসূ। আইনি জট কাটাতে সরকারের তরফে, এসএসসির তরফে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আশা করা যায় জটিলতা কাটবে। কোথাও না কোথাও ভুল হয়েছিল। তার জন্য জটিলতা। অনেক ছেলেমেয়েকে ভুগতে হয়েছে। সমস্ত দিক সামলে সমাধানের পথ বার করা হচ্ছে।” এনিয়ে কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ”অনেকেই চায়, ধরনা মঞ্চ থাকুক। জট পাকানোর জন্য কিছু শকুনি বসে থাকে। আমরা চাইছি চাকরি হোক। সকলে চাকরি পাক।”
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মত, ”মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই এই ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ছিলেন। কিছু আইনি জটিলতা ছিল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা নিয়োগ দেব বলেছিলাম। আশা করছি, এই জটিলতা, এই জট দ্রুত কাটিয়ে নিতে পারব। আমাদের দিক থেকে যা যা করণীয় করব। মহামান্য আদালত যেভাবে চাইবেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে নিয়োগ দিতে শুরু করব। সুপ্রিম কোর্টের তারিখ পাওয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। আশা করছি, তারিখ পাব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.