Advertisement
Advertisement

Breaking News

সিঁথি

সিঁথি কাণ্ডে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে গা-ঢাকা ‘নিখোঁজ’ আসুরার

চুরির অভিযুক্ত কীভাবে থানার বাইরে গেলেন, তদন্তে গোয়েন্দারা।

Sinthi unnatural death case: 'Missing' Asura Bibi found at relatives home
Published by: Sayani Sen
  • Posted:February 12, 2020 3:52 pm
  • Updated:February 12, 2020 8:50 pm  

অর্ণব আইচ: যে মহিলার দাবির ভিত্তিতে সিঁথি থানায় তুলে নিয়ে আসা হয়েছিল ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউকে, আনসুরা বিবি ওরফে আসুরা বিবি নামে ওই মহিলাকে কেন বাইরে চলে যেতে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। কারণ, একবার বাইরে চলে যাওয়ার পর আসুরা বিবি আর পাইকপাড়ার নাইট শেল্টারে ফিরে আসেননি। তাঁকে কোথাও দেখতে না পেয়ে রটে যায়, ‘নিখোঁজ’ হয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলা। কিন্তু মহিলার বক্তব্য এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, তাঁকে খুঁজে পেতে প্রথমে গলদঘর্ম অবস্থা হয় লালবাজারের গোয়েন্দাদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসুরার সন্ধান মেলে। এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, ‘পুলিশি ঝামেলা’ থেকে দূরে থাকতেই রীতিমতো গা-ঢাকা দেন আসুরা। তিন সন্তানকে নাইট শেল্টারে রেখে দিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন উত্তর কলকাতায় এক নিকটাত্মীয়ের কাছে।

উল্লেখ্য, আগেও মাঝেমধ্যে তিনি শেল্টার ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। বুধবার বিকেলে গোয়েন্দারা সেই আত্মীয়ের বাড়ির সন্ধান পান। জানা গিয়েছে, সিঁথি থানায় মৃত ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউকে জেরা করার সময় সামনেই ছিলেন আসুরা। তাই তদন্তে ওই মহিলার বক্তবে্যর গুরুত্ব যথেষ্ঠ। যেহেতু আসুরা বিবি অন্তঃসত্ত্বা ও তাঁর শরীর ভাল নয়, তাই লালবাজারে ডেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে তাঁর কাছেই যাচ্ছেন গোয়েন্দারা। ওই আত্মীয়ের বাড়িতে বসেই তাঁর বক্তব্য নেওয়া শুরু হয়েছে। ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলার বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে লালবাজার। রাজকুমার সাউয়ের ছেলেরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে রাজকুমার সাউয়ের মৃতু্যর পর কয়েকজন পুলিশকর্মী থানার পিছনের গেট দিয়ে আসুরাকে বের করে দেন। তাঁরাই তাঁকে সামনে নিয়ে আসেন। আসুরা তখন বলেন, তাঁকে এক পুলিশকর্মী ও এক মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করার জন্য তাঁকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছে। তিনি তাই থানায় যান। তখনই তাঁকে বলা হয় যে, তিনি সিঁথির একটি বহুতল আবাসন থেকে চুরি করেছেন। তিনি চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেন। তখন তাঁকে দিয়ে জোর করে বলিয়ে নেওয়া হয় যে, তিনি রাজকুমারকে চুরির জিনিস বিক্রি করেছেন।

Advertisement

যদিও প্রাথমিক তদন্তের পর গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, আসুরা যে চুরির সঙ্গে যুক্ত, তার প্রমাণ মিলেছে সিসিটিভির ফুটেজ থেকে। ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে, পেশায় কাগজকুড়ানি আসুরা বিবি তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে আবাসনে ঢুকে বস্তায় রাখা দামী কল, কলের পাইপ ও মার্বেল হাতিয়ে নেন। যেহেতু তিনি অন্তঃসত্ত্বা, তাই তিনি ছেলেদের মাথায় দু’বস্তাভর্তি ওই জিনিসগুলি বাইরে পাচার করেন। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে আসুরা বিবি স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউয়ের কাছে বিক্রি করেছিলেন প্রায় একটি বিশেষ ব্র‌্যান্ডের দু’বস্তা দামী কল। এর পরই রাজকুমারকে থানায় নিয়ে আসা হয়। দু’জনকে বসিয়ে জেরা করা হয়। এবার গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, পুলিশ হেফজাতে মৃতু্য নিয়ে গোলমালের সময় কেন তাঁকে বাইরে যেতে দেওয়া হল। চুরির মূল অভিযুক্ত হলে আসুরাকে কেন গ্রেপ্তার করা হল না? কেনই বা পুলিশের খাতার পাতা ছিঁড়ে তালিকা পেশ করে অফিসাররা বললেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকার জিনিস কিনে আনতে? এদিন তদন্ত শুরু করে এক সাব ইন্সপেক্টর ও এক সার্জেন্টকে জেরা করা হয়েছে। থানার সিসিটিভির ফুটেজগুলি খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। যেহেতু বিচারবিভাগীয় তদন্ত চলছে, তাই রাজকুমারের তিন ভাই ও এক বোন আদালতে নিজেদের বয়ান দেন। এই ঘটনার আরও প্রত্যক্ষদর্শীদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement