সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: নদিয়ার এক সোনার ব্যবসায়ীকে প্রথমে অপহরণ ও পরে তাঁর কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকার সোনাদানা ও নগদ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কলকাতা পুলিশের এক এএসআই-সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করল গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত এএসআই আশিস চন্দ্রকে বেলঘরিয়ার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে টাটা সুমো করে ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছিল, তার চালক নেপালচন্দ্র ধর এবং ধৃত এএসআই আশিসের বন্ধু বলাইকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের বুধবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
নদিয়ার প্রবীণ স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবলু নাথ (৫১)। ব্যবসার কাজে তাঁকে প্রায় আসতে হয় কলকাতার সোনা পট্টিতে। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়িক কাজে সোনা পট্টিতে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কাছে কাঁচা সোনা ও নগদ টাকাও প্রায়ই থাকত। সেকথা জানতেন কলকাতা পুলিশের রেকর্ড সেকশনের ধৃত এএসআই আশিস। এই তথ্য জানার পরেই ধৃত এএসআই আশিস চন্দ্র তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ওই সোনার ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ছিনতাইয়ের ছক কষে ফেলেন কয়েকদিন আগেই। সেই ছক অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও ছিনতাইয়ের অপারেশন চালান তাঁরা।
[ আরও পড়ুন: আদৌ কি কাজ হবে? ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকীদের অপমান বিতর্কে সরকারকে প্রশ্ন বিরোধীদের ]
ওই দিন নদিয়ার বাড়ি থেকে বের হয়ে সোনার ব্যবসায়ী বাবলু নাথ আসেন সোনা পট্টিতে। তাঁর ব্যাগে ছিল ৫০ গ্রাম সোনা ও নগদ এক লক্ষ টাকা। মুচিপাড়া থানা এলাকার কাছে তিনি আসতেই একটি টাটা সুমোয় পাঁচজন চেপে এসে তাঁর পথ আগলায়। এরপর আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে জোর করে টাটা সুমোয় চাপিয়ে তারা অপহরণ করে নিয়ে যায়। গাড়ির মধ্যে ওই পাঁচজন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর চোখ-মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়। এরপর তাঁকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে তারা চলে আসে এয়ারপোর্ট থানা এলাকার একটি নির্জন জায়গায়। সেখানে ব্যবসায়ীর ব্যাগে থাকা ৫০ গ্রাম সোনা ও এক লক্ষ টাকা ছিনতাই করে তারা। ছিনতাইয়ের পর ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে চম্পট দেয় পাঁচজন দুষ্কৃতী।
শুক্রবার মুচিপাড়া থানায় এসে পুরো ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন নদিয়ার স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবলু নাথ। অভিযোগ দায়ের করার পর তদন্তে নামে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তদন্তে সহযোগিতা করেন লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা। রাস্তার সিসিটিভির ফুটেজে ওই টাটা সুমোর নম্বর জানতে পারে গোয়েন্দা পুলিশ। সেই সূত্র ধরে প্রথমে টাটা সুমোর চালক নেপালচন্দ্র ধরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেরা করে গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে, ওই টাটা সুমো ভাড়া নিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর আশিস চন্দ্র। এর পরেই তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরই সূত্র ধরে গ্রেপ্তার করা হয় বলাইকে। ধৃতদের জেরা করে পলাতক বাকি দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
[ আরও পড়ুন: কাটমানি নিয়েছেন দুই তৃণমূল কাউন্সিলর, পোস্টার পড়ল সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার ও বাগুইআটিতে ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.