দীপঙ্কর মণ্ডল: জেএনইউ, পণ্ডিচেরী এবং হায়দরাবাদের পর এবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল নিল এসএফআই। পশ্চিমবঙ্গে ছাত্র নির্বাচনের প্রথম দরজা খুলে দিয়েছিল প্রেসিডেন্সি। সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের কাছে এখানে বিরোধীরা খড়কুটোর মতো উবে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পর সন্ধেয় ফল প্রকাশ হয়। জিএস, এজিএস, প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং জিসিআর সেক্রেটারি- এই পাঁচটি আসনেই বিপুলভোটে জয়ী সিপিএমের ছাত্র শাখা। শুধু তাই নয়, ১১৫টি সিআর আসনের ৫৮টি আসনেও জয়ী ভারতের ছাত্র ফেডারেশন।
প্রেসিডেন্সিতে ২০১০ সালে শেষবার ছাত্র সংসদের দায়িত্ব পেয়েছিল এসএফআই। তারপর থেকে স্বাধীন অরাজনৈতিক সংগঠন আইসির কাছে ক্রমাগত হার। মাঝে দু’বছর রাজ্যের কোনও প্রতিষ্ঠানেই ছাত্র ভোট হয়নি। এরমাঝে আইসির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা-সহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এবার ভোটে রাম মন্দিরের বিরোধিতা-সহ দুনিয়ার নানা ঘটনায় প্রতিবাদ করেছে আইসি। কিন্তু নিজেদের প্রতিষ্ঠানেই যে তলে তলে প্রবল ক্ষোভ জমছিল তা টের পায়নি স্বাধীন সংগঠন। উলটোদিকে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষানীতি-সহ প্রেসিডেন্সির নানা ইস্যু নিয়ে সরব ছিল এসএফআই। ক্যান্টিনের খাবারের মান, গ্রন্থাগারে বাড়তি বইয়ের অপ্রতুলতা, ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতা, বাংলা মাধ্যম থেকে আসা পড়ুয়াদের হীনমন্যতা ইত্যাদি ইস্যুতে সারা বছর আলোচনা করেছিল এসএফআই। ফল এসেছে হাতেনাতে। জয়ের পর ক্যাম্পাসজুড়ে শুধু লাল আবির। বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস। স্লোগানে, গানে কবিতায় জয় উদযাপন করেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। দলের নেতারাও উচ্ছ্বসিত।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এবিভিপি প্রেসিডন্সিতে প্রার্থী দেয়নি। নির্দল কয়েকজন প্রার্থী সিআর আসনে জিতেছেন। তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের তরফে সুপ্রিয় চন্দ দাবি করেন, “আমরা পাঁচটি সিআর আসনে জিতেছি। বেশ কয়েকজন নির্দল জয়ী প্রার্থী আমাদের সঙ্গে আছেন।” তবে বিজয়ী প্রার্থীদের নাম জানাতে পারেনি টিএমসিপি। সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ তিনটি সিআর আসন পেয়েছে। এসইউসির ছাত্র শাখা ডিএসও এবং নকশালপন্থী সংগঠন এআইএসএ একটি করে সিআর আসনে জিতেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে এবার ‘নোটা’য় প্রচুর ভোট পড়েছে। বেশ কয়েকটি আসনে হার-জিত ফ্যাক্টর হয়েছে নোটায়। আইসি’র সাফল্য ৪৭টি সিআর আসনে। ফল ঘোষণার পর আইসি নেতাদের দেখা মেলেনি। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, মধুজা সেনরায়, সপ্তর্ষী দেবের মতো ছাত্রনেতারা গেটের বাইরে থেকে জয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, আমরা যে সবসময় ছাত্রছাত্রীদের পাশে আছি তার প্রমান এই জয়। জয়ের পর এক ছাত্রী কবিতায় প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেন, “এখান থেকেই শুরু হোক অধ্যায়/ কবিতায় গানে আগলে রেখেছি ঘাঁটি / স্লোগানে স্লোগানে জোট বাঁধে প্রত্যয়/ প্রহর গুনছে নাছোড়বান্দা মাটি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.