সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুলিশের পোশাক পরা ছদ্মবেশি দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হতে হয়েছে আমতার (Amta) ছাত্রনেতা আনিস খানকে। অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে ঢুকেচ ছাদ থেকে ঠেলে তাঁকে খুন করা হয়েছে। শনিবার সকালে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্যের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে আনিসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা – সকলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন। ছাত্রনেতার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের যথাযথ শাস্তি চাই, এই দাবিতে সরব তাঁরা সকলে। নিজেদের দাবি আদায়ে জোরদার হচ্ছে আন্দোলন। রবিবারই আনিসের হত্যার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই (SFI)।
আর ২২ তারিখ মহাকরণ অভিযানে নামছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন আনিস। ছিলেন সেখানকার অন্যতম প্রতিবাদী মুখ। CAA-NRC’র বিরুদ্ধে গর্জে উঠে আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন আনিস খান। সোশ্য়াল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে হাজার হাজার পোস্ট তৈরি হচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় আনিস হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কলকাতা। পার্কসার্কাস (Park Circus) সেভেন পয়েন্টের কাছে মানববন্ধন করে রাস্তা অবরোধ করেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন আনিস। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা অবরোধ হঠাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে প্রতিবাদীদের। কলকাতার এমন গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিংয়ে পড়ুয়াদের অবরোধের জেরে আটকে পড়ে যান চলাচল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই প্রতিবাদ আরও ছড়িয়ে দিতে রবিবার রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে এসএফআইয়ের। আনিস বামপন্থী ছাত্র সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে তিনি আব্বাস সিদ্দিকীর দল আইএসএফে (Indian Secular Front) যোগ দেন। তাঁকে দলের সক্রিয় সদস্য বলে দাবি করেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। আনিসের খুনের খবর পেয়ে তিনি শনিবারই আমতায় যান। তদন্তের উপর ভরসা রেখে হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন। আমতায় গিয়েছেন কৌশিক সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, আগেও আনিসকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। তারপরও এদিনের ঘটনায় স্বভাবতই ক্ষোভ বাড়ছে।
এদিকে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার মহাকরণ (Writers’ Building) অভিযানের ডাক দিয়েছেন। এই মহাকরণেই রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর। পড়ুয়াদের অভিযোগ, আনিস হত্যার নেপথ্যে রাজ্যের শাসকদলের একাংশের যোগ রয়েছে। সেই কারণে এর যথাযথ বিচার চাইতে তাঁদের মহাকরণ অভিযানের পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে। আমতার ছাত্রনেতা খুনের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে ওঠায় পুলিশও বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নেমেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.