দীপঙ্কর মণ্ডল: রক্ষণশীলতার ট্যাবু ভাঙল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আগামী প্রজন্মকে বেশি করে স্বাস্থ্য সচেতন করতে স্কুলের সিলেবাস সংস্কার করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। হেপাটাইটিস নির্মূলে নানা পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে অষ্টম শ্রেণীর বইতে। একইসঙ্গে অসাবধানী যৌন সংসর্গের ফলে যে হেপাটাইটিস হতে পারে সেই পাঠও পাবে ছাত্রছাত্রীরা।
কৈশোরের ক্লাসরুমকে সাবালক করতে বয়ঃসন্ধির বিভিন্ন সমস্যাও পড়ানোর আলোচনা চলছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু সিলেবাসে ঢুকেছে। অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যে বিভিন্ন ধরনের হেপাটাইটিস নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো হেপাটাইটিস রোখার বিভিন্ন উপায় জানানো হবে পড়ুয়াদের। পর্ষদের ‘স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা’ বইয়ের একটি অংশে বলা হয়েছে, ‘একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে অপর একজনের যৌন কার্যকলাপের ফলে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে’। বস্তুত বয়ঃসন্ধিতে অনেকেই ভুল করে ফেলে। যার জের বয়ে বেড়াতে হয় গোটা জীবন। অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে মূল্যবোধ ও নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের পাঠ দিতে চায় সরকার। স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছেন, “সচেতন নাগরিক হিসাবে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বড় করতে আমরা চেষ্টা করছি। কোনটা ভাল এবং কোনটা খারাপ সেই নৈতিক বোধ যেন তাদের তৈরি হয়। পথ নিরাপত্তা, বিপর্যয় মোকাবিলা, সুখাদ্য এবং অখাদ্য চিহ্নিতকরণ, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, দূষণ কমানো, উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই করা, কন্যাশ্রী, প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করছে এমন বর্জ্য, ভূমিকম্প বা ঝড় এলে কী করণীয় এসব আমরা স্কুল পাঠ্যে রেখেছি। সুস্থ সমাজ বজায় রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য।”
[ শহরে ফের বহুতল আতঙ্ক, তিলজলায় বিপজ্জনকভাবে হেলে পড়ল বাড়ি ]
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যৌন সম্পর্ক ছাড়াও ট্যাটু আঁকা, নাভিতে রিং লাগানো, নাক বা কান ফোঁড়ানো, রক্ত দেওয়া নেওয়া, দাঁত তোলার সময় বেশি করে সচেতনতা দরকার। আগাম ব্যবস্থা না নিলে হেপাটাইটিস-সহ নানা রোগে সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সিলেবাসে নতুন বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। সচেতনতামূলক বিষয়ে তুমুল উৎসাহ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। পর্ষদ সূত্রে খবর, স্কুলগুলিতে নতুন বই পাঠানো শুরু হয়েছে। ‘স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা’ বইয়ের সম্পাদক দীপেন বসু জানিয়েছেন, “বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু ২০৩০ সালের মধ্যে দুনিয়া থেকে হেপাটাইটিস নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। সেকথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন ধরনের হেপাটাইটিস ও তা রোখার কথা স্কুলপাঠ্যে রাখা হয়েছে।” পর্ষদ সূত্রে খবর, ২০১১ সালের আগে স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষার বই ছিল না। স্বাস্থ্য ও স্কুলশিক্ষা দফতরের মিলিত চেষ্টায় বইটি তৈরি হয়েছে।
[ কলকাতা হাই কোর্টের স্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হলেন দেবাশিস করগুপ্ত ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.