ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: গত ২৪ ঘণ্টায় সাতটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর সাক্ষী খাস কলকাতা শহর! সবমিলিয়ে ৭ জন। হ্যাঁ, একই দিনে শহরে আত্মঘাতীর সংখ্যা ঠিক এটাই। আত্মহননের পথ বেছে নেওয়ার তালিকায় যেমন প্রৌঢ় রয়েছেন, তেমনি রয়েছে বছর দশেকের পড়ুয়াও! প্রত্যেকেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কোন পরিস্থিতিতে পড়ে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিল ১০ বছর বয়সের সেই পড়ুয়া কিংবা সত্তরের বৃদ্ধ? কেন বারবার এই আত্মহত্যার কথা উঠে আসছে খবরের শিরোনামে? অনেকের কপালেই কিন্তু চিন্তার ভাঁজ ফেলছে এই বিষয়টি।
কাপড় শুকোতে দেওয়ার নাম করে ছাদে উঠেছিল দশ বছরের ছেলেটি। কিছুক্ষণ পরই গলায় রবারের পাইপ দিয়ে ঝুলতে দেখা গেল তাকে। দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া স্টেশন রোডের ঘটনা। এদিকে, বুধবার এক কলেজ ছাত্র-সহ শহরে আরও পাঁচ জনের আত্মঘাতী হওয়ার খবর মিলেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দশ বছরের ওই বালক লেক এলাকার এটি চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাসিন্দা। মা কয়েকটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। বাবার কোনও স্থায়ী রোজগার নেই। বাড়ির কাছেরই একটি স্কুলে পড়ত। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। মা বাড়ি বাড়ি কাজ করায় সারাদিন ঢাকুরিয়া স্টেশন রোডের একটি বাড়িতে থাকত। সেখানেই এক ব্যক্তির কাছে পড়াশোনা করত। এদিন দুপুরে তিনতলার বাড়ির ছাদে কাপড় শুকোতে দিতে যায় সে। ছাদে গিয়ে দেখা যায়, একটি মোটা পাইপের সঙ্গে গলায় রবারের পাইপের ফাঁস দিয়ে ঝুলছে পঞ্চম শ্রেণির ওই পড়ুয়া।
অন্যদিকে রিজেন্ট পার্কের মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সরণিতে আত্মঘাতী হন রোহিত গুপ্তা (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্র। জানা গিয়েছে, তার মা-বাবা এখানে থাকতেন না। পড়াশোনা করতেন না বলে অভিভাবকরা তাঁকে বকাবকি করতেন। সিলিং থেকে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
লকডাউনে হতাশায় ভুগছিলেন নরেশ সাহা (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। এদিন পাটুলির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। আবার বেহালার ক্যানাল রোডের বাসিন্দা বছর সত্তরের নতুল মণ্ডল, তিনিও সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বেলেঘাটার কালীতলা বোস লেনে বাসিন্দা ইন্দ্রনীল কর্মকার (৩০) নামে এক যুবকও বুধবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। টালিগঞ্জ থানা এলাকার হাজরা রোডে গলায় বেডশিটের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মোহন বন্দ্যোপাধ্যায় (৪০)। মুচিপাড়ার তরুণ টোটন দাস (১৯) নামে এক তরুণও এই একই দিনে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.