গৌতম ব্রহ্ম ও ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য : রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও উদ্যোগী রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে বৈঠকের পর চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে একাধিক ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee)। নার্সদের দায়িত্ব এবং সম্মান বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। তাঁদের পদোন্নতি নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চিকিৎসা পরিকাঠামোতেও বড় বদলের ঘোষণা করেন তিনি।
পূর্বের ঘোষণা মতোই এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মনিটরিংয়ে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার পুরপ্রসাসক ফিরহাদ হাকিম, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও। প্রায় আধঘণ্টা চলে বৈঠক। তার পরই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একাধিক ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যের বহু নার্স অনেক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের জীবনটাকেই হাসপাতালের সঙ্গে জুড়ে ফেলেছেন। তাঁদের সম্মান, দায়িত্ব বৃদ্ধি করতে, উৎসাহিত করাতে নার্সদের (Nurse) ক্ষমতায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বহু নার্স ভাল কাজ করছেন। তাঁদের প্র্যাকটিশনার নার্স পদে পদোন্নতি করা যেতে পারে।”
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, সিস্টারদের জন্য ‘প্র্যাকটিশনার’ পদটি একেবারে নতুন। এটা এতদিন চিকিৎসকদের জন্য ব্যবহৃত হত। নার্সরা সাধারণত ছোটখাটো ‘মেডিক্যাল সিদ্ধান্ত’ নিতে পারেন না। তাঁদের চিকিৎসকদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। প্র্যাকটিশনার নার্স হলে চিকিৎসা সংক্রান্ত বহু সিদ্ধান্ত সিস্টাররা নিজেরাই নিতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রী এহেন ঘোষণায় খুশি নার্স মহল। তাঁদের কথায়, “আইনগত সমস্যা না থাকলে আমাদের এই দায়িত্ব নিতে কোনও অসুবিধা নেই।” রাজ্য বহু দিন ধরেই মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদেরও নার্স হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এবার সেই ব্যবহার আরও বাড়ানোর হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্য সরকার চিকিৎসকদের অভাব মেটাতে গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কোয়াক বা হাতুড়েদের ব্যবহারের ভাবনাচিন্তা করছিল। এবার সেই পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় কোয়াক বা হাতুড়েদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। আমরাও এনিয়ে কাজ করেছি। এবার তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁদের কাজে লাগানো হবে।”
এদিন হবু চিকিৎসকদের থাকার জায়গার অভাব মেটাতেও উদ্যোগ নিল রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য লি রোডে ১০ তলা হস্টেল তৈরি হচ্ছে। আবার হেস্টিংসে জমি খোঁজা হচ্ছে। যেখানে মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যালদের জন্য হস্টেল তৈরি হবে। নার্সদের হস্টেল তৈরির জন্য জমি খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফিরহাদ হাকিমকে। শুধু তাই নয়, ডাক্তার ও নার্সদের আবাসনের জন্য ১০ একর জমির খোঁজ করতে বলেছেন হিডকো চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে। ডাক্তার, নার্সদের বিনামূল্যে জমি দেবে রাজ্য। নিজেরা টাকা দিয়ে বাড়ি বানিয়ে নিতে পারবেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.