Advertisement
Advertisement
Blue tongue disease

রক্তচোষা মাছির কামড়ে নীল গবাদি পশুর জিভ! ‘ব্লু টাং’ রোধে টিকা তৈরিতে শরিক বাংলা

গবাদি পশুপালকদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক 'ব্লু টাং' ভাইরাস।

Scientist are trying to invent a vaccine against blue tongue disease । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 18, 2022 10:25 am
  • Updated:April 18, 2022 10:25 am  

গৌতম ব্রহ্ম: রক্তচোষা এক ধরনের মাছি। যার দংশনে নীল হয়ে যাচ্ছে জিহ্বা। রক্ত জমাট বাঁধছে শরীরের বিভিন্ন অংশে। এ এক অদ্ভুত রোগ। নাম ব্লু টাং (Blue Tongue Disease)। মহামারী হয়ে দক্ষিণ ভারতে যা ছড়িয়ে পড়েছে বহুবার। প্রাণ কেড়েছে কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ুর বহু গবাদি পশুর। এবার বাংলা-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও দেখা মিলল সেই রক্তচোষা মাছির। শুরু হল মহামারীর আশঙ্কা। উদ্বেগে প্রাণী বিজ্ঞানীরা।
ব্লু টাং ভাইরাসের বাহক সেই রক্তচোষা কিউলিকয়র্ডিস মাছি। গবাদি পশুপালকদের কাছে যা মূর্তিমান আতঙ্ক। কিন্তু ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব অংশে এই ভাইরাস কখনও মহামারীর আকারে দেখা দেয়নি। তাই এর অস্তিত্ব নিয়ে প্রবল ধোঁয়াশা ছিল প্রাণী বিজ্ঞানী ও পশুচিকিৎসকদের মধ্যে। অবশেষে সব সংশয় দূর হল। বাংলা, ওড়িশা, বিহার, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশেও দেখা মিলল এই মাছির। যা ব্লু টাং ভাইরাস ছড়িয়ে প্রাণে মারছে গরু, ছাগল, মোষ, মিথুনদের।

[আরও পড়ুন: ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা! গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত আগের দিনের প্রায় দ্বিগুণ, অনেক বাড়ল মৃত্যু]

২০০১ সালের জুলাই থেকে চলছে গবেষণা। নেতৃত্বে দশটি প্রাণী গবেষণা কেন্দ্র। পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের অংশ থেকে মোট ৭৩৪৬টি প্রাণীর শরীর থেকে রক্তরসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে ভেড়া ২১৪৭, ছাগল ৩২৯০, গরু ১৮৪৪, মোষ ৩০ এবং মিথুন ৩৫। অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন, দু’রকম পদ্ধতিতেই নমুনাগুলির পরীক্ষা হয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ প্রাণীর শরীরেই অ্যান্টিবডি দেখা গিয়েছে। এতেই রক্তচাপ বেড়েছে প্রাণী বিজ্ঞানীদের। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে ‘ব্লু টাং’ ঠেকাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকাও তৈরি করা হয়েছে। দক্ষিণ ভারতে যেহেতু এই রোগের দাপট অনেক বেশি, তাই সেখানেই পরীক্ষামূলকভাবে টিকাদানের কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

ন’য়ের দশকে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে ব্লু টাং মহামারী দেখা দেয়। যা ৩০ হাজারের বেশি ভেড়ার প্রাণ কাড়ে। প্রবল ক্ষতির মুখে পড়েন মেষপালকরা। তারপরই টিকা তৈরির তোড়জোড় শুরু করে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’। শুরু হয় দেশজুড়ে সমীক্ষা। পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে চলা সমীক্ষার নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের প্রাণী ও মৎস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ও উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যে ব্লু টাং ভাইরাসের প্রকোপ থাকতে পারে, এটা আন্দাজ করা গেলেও ক্লিনিক্যাল কেস না থাকায় জানা ছিল না।

এই গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে জানা গেল, এই অঞ্চলের ভেড়া, ছাগল ও কিউলিকয়র্ডিস মাছিতে এই ভাইরাস রয়েছে। এমনকী, আমাদের রাজ্যের প্রাণীকেও ব্লু টাং ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে। আগামী দিনে এই অঞ্চলের প্রাণীদের মধ্যে এই রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও অমূলক নয়। এই কথাই আমরা সম্প্রতি স্প্রিঞ্জার প্রকাশনা গোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘বেসিক অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড জুলজি’তে তুলে ধরেছি। সুখের কথা, সারা ভারতব্যাপী চলা এই প্রকল্প চাষিভাইদের হাতে কার্যকরী টিকা তুলে দিতে পেরেছে। এই গবেষণার সাফল্য এখানেই।

[আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে যুগান্তকারী পদক্ষেপ, পিজিতেও এবার জন্মাবে নলজাতক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement