কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: লকডাউন পর্ব পেরিয়ে দেশ ধীরে ধীরে আনলকের পথে এগোলেও বন্ধ স্কুল, কলেজ-সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। তবে তারই মধ্যে সল্টলেকের এক বেসরকারি স্কুল ডেকে পাঠাল কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে। তাদের শামিল করা হলো স্কুল স্যানিটাইজেশনে। স্কুল কর্তৃপক্ষের এই ভূমিকায় তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক। অভিভাবকদের একাংশ প্রশ্ন তুলছে, করোনার ছোঁয়াচ এড়াতে যখন দেশজুড়ে ত্রাহি ত্রাহি রব, তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের হাজির করিয়ে কীভাবে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করাল? একই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে।
সল্টলেকের CL ব্লকের কল্যাণী পাবলিক স্কুল। সোমবার হাতে গোনা ছাত্রছাত্রী এবং কয়েকজন শিক্ষককে স্কুলে হাজির করিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ক্লাস করা হয়েছে। পড়ুয়া এবং শিক্ষক – দু’পক্ষই অবশ্য গ্লাভস, মাস্ক পরেই পড়াশোনায় অংশ নিয়েছেন। লকডাউন পুরোপুরি উঠে যাওয়ার পর স্কুল কীভাবে জীবাণুমুক্ত করা হবে, তারই মহড়া চালানো হয় কল্যাণী পাবলিক স্কুলে। সেখানে বিদেশি পদ্ধতিতে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল প্রবেশপথে। প্রতি ক্লাসে কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক, শিক্ষিকা যাঁরা স্কুলে ঢুকবেন, থার্মাল স্ক্যানিংয়ে তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। স্কুলের কর্মচারীরা পিপিই পড়ে কাজ করবেন বলে জানানো হয়েছে স্কুলের তরফে।
এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের পরবর্তী পদক্ষেপেই বিতর্ক বাঁধে। স্কুলের তরফে জানানো হয়, তিনদিন পরপর একদিন পুরো স্কুল বাড়ি জীবাণুমুক্ত করার কাজ হবে আর তাতে অংশ নিতে হবে ছাত্রছাত্রীদেরও। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যেখানে করোনা সংক্রমণের হার ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী, সেখানে স্কুল খোলার আগেই ছাত্রছাত্রীদের ডেকে নিয়ে এসে জীবাণুমুক্ত প্রক্রিয়াকরণে শামিল করা কতটা উচিত কাজ হল?
স্কুলের চেয়ারম্যান রুদ্রবীর রায় জানিয়েছেন, “নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেই প্রত্যেককে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রত্যেকের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অভিভাবকরাও সঙ্গে এসেছিলেন।” এক অভিভাবক জানিয়েছেন, স্কুলের জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাপনায় তিনি খুশি হয়েছেন। মোটেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন না। আবার কয়েকজন অভিভাবক জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়াতে ছাত্রছাত্রীদের হাজির করার বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল খোলার কথা। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এদিন মহড়া নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.