স্টাফ রিপোর্টার: কোভিডের সময় নয়ছয় হয়েছে বিপুল টাকা। কোভিডের তহবিল দিয়ে কেনা হয়েছে বিলাসবহুল আসবাব। আবার ওই সময় সরকারের টাকায় কেনা পরীক্ষার মূল্যবান যন্ত্রপাতি সরকারি হাসপাতালের বদলে ‘পাচার করা’ হয়েছে নার্সিংহোমে। পুলিশের কাছে উঠে এসেছে এমনই অভিযোগ।
সম্প্রতি উত্তর কলকাতার টালা থানায় আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও অন্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়। এই তদন্তে এবার সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও স্বাস্থ্যদপ্তর ও পুলিশের নজরে আরও অন্তত পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্তা। তাঁদের মধ্যে একজন আর জি কর হাসপাতালেরই এক প্রাক্তন কর্তা। অন্য এক চিকিৎসক তথা কর্তা এখনও আর জি করে কর্মরত।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, টালা থানায় আসা অভিযোগ অনুযায়ী, বিপুল সরকারি টাকা তছরূপ করা হয়েছে। অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবন ও কলেজ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়াই ফুড স্টল, কাফে, ক্যান্টিন, সুলভ কমপ্লেক্স তৈরির জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়। তিনজন বিশেষ ব্যবসায়ীই এই প্রত্যেকটি ‘বেআইনি’ টেন্ডার পান। তাঁদের একেকজনকে কয়েক কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়। ফিনান্স ও অ্যাকাউন্ট অফিসারদের কিছু না জানিয়েই এই বরাতগুলি দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ ও অন্যান্য কাজ করানো হয় পূর্ত দপ্তরকে না জানিয়েই। ডাক্তারি শিক্ষার তহবিল নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ, পুরসভার বদলে হাসপাতালের কর্তারা পার্কিং থেকে টাকা আদায় করে তা সরিয়ে দেন। চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়েছে। এক স্বাস্থ্যকর্তার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে চাহিদামতো রদবদলেরও অভিযোগ উঠেছে। ভেন্ডার বা বিক্রেতাদের কাছ থেকেও কুড়ি শতাংশ টাকা তোলা হত বলেও অভিযোগ উঠেছে। করোনার সময়ে কোভিডের জন্য আসা রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে আরামদায়ক চেয়ার, সোফা, ডাইনিং টেবিল, ফ্রিজ ও আরও অনেক কিছু কেনা হয়। সরকারি টাকায় কেনা বহু জিনিসও এমন নার্সিংহোমে যেত, যার আসল মালিক স্বাস্থ্যকর্তা। এমনকী, ভেন্ডারদের সাহায্যে এক স্বাস্থ্যকর্তার বাগানবাড়ি সাজানো হত ও তা না করলে তাঁরা হুমকির মুখে পড়তেন এমনও অভিযোগ উঠে এসেছে। এই দুর্নীতিগুলির ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.