মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বারাসতের সভা শেষে সন্দেশখালির পাঁচ মহিলার সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এবার পালটা দিল তৃণমূল। নারীদিবসের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মঞ্চে সন্দেশখালির সাবিত্রী সরকার-সহ বেশ কয়েকজন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাও হয় তাঁদের। সন্দেশখালিতে জমি, ভেড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছিল। তেমনই আবার নারী নির্যাতনের নালিশের পাহাড়ও জমা হয়েছিল বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে থাকা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে। নারীদিবসের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ওই উপদ্রুত এলাকার মহিলার উপস্থিতি যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সন্দেশখালির সমস্যা মেটায় মমতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই মহিলা। সন্দেশখালি নিয়ে সমস্যার কথা এবার থেকে সরাসরি তাঁকে জানাতে বলেছেন খোদ মমতা। ওই গ্রাম নিয়ে ভুয়ো খবর রটানো হয়েছে বলে বিজেপিকে দুষেছেনও তিনি।
মমতা বলেন, “কালকে একজন এসে সন্দেশখালি নিয়ে অনেক কিছু বলে গেলেন। কিন্তু ভুল সন্দেশ দিলেন। কয়েকটা ঘটনা হতেই পারে। হতে পারে সব খবর আমরা পাই না। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান নয়। অন্যায় হয়ে থাকলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নিই। তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করতেও পিছপা হই না।” বলে রাখা ভালো, সন্দেশখালি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই শেখ শাহজাহান এবং তাঁর দুই সাগরেদ শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শাহজাহানকে আগামী ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ডও করেছে তৃণমূল।
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা আরও বলেন, “কত জায়গায় বিজেপির নেতাদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন মা-বোনেরা। তাঁরা ভয়ে কিছু বলতে পারেন না। কিন্তু বাংলার মেয়েরা কথা বলতে জানে। বাংলায় কিছু হলে মহিলারা তেড়েফুঁড়ে ওঠে, আমি এটা পছন্দ করি।” বুধবারই বারাসতের সভামঞ্চ থেকে সন্দেশখালি ইস্যুতে সুর চড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নাম না করে তাঁকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘বাংলার উপর এত রাগ কেন? মণিপুরে যখন মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটানো হচ্ছিল কোথায় ছিলেন? হাথরসে যখন ধর্ষণের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হল, তখন কোথায় ছিলেন?’’ বাংলাকে নিরাপদতম রাজ্য এবং কলকাতাকে নিরাপদতম শহর বলেও উল্লেখ করেন মমতা। বক্তব্যের শেষের দিকে মমতা বলেন, “সন্দেশখালি থেকে মিষ্টি সন্দেশ নিয়ে এসেছে আমার জন্য।”
মমতার এদিনের বক্তব্যে নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে বার বার উঠে এসেছে ‘পিন্টুবাবু’র নাম। তোপ দেগে তিনি বলেন, “এত রাগ কেন পিন্টুবাবু? আপনার পার্টির একজন নেতাকে মহিলা অ্যথলিটদের অত্যাচার করার পরও বক্সিং বোর্ডের চেয়ারম্যান করে দিলেন। বলছে নারী কো সম্মান দেনা চাহিয়ে। কত সম্মান দেন? বিলকিসের কথা ভুলে গিয়েছেন? কত মহিলা নির্যাতিত? ভয়ে কথা বলতে পারে না।” নাম না করে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলা ভাগের চেষ্টারও অভিযোগ করেন মমতা। তাঁর তোপ, “আমরা এখানে আধার কার্ড কাটতে দেব না, NRC করতে দেব না। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ করতে দেব না। ভাগাভাগি করতে দেব না। পিন্টুবাবুর তাই রাগ। পিন্টুবাবু কো গুস্সা কিউ আতা হ্যায়?” কে এই ‘পিন্টুবাবু’ তা নিয়ে নানা জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, ‘পিন্টুবাবু’ বলতে নাম না করে নরেন্দ্র মোদিকেই কটাক্ষ করেছেন মমতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.