সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান
গোবিন্দ রায়: সন্দেশখালিতে আক্রান্ত ইডির বিরুদ্ধে এবার উঠল চুরি এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ। তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের কেয়ারটেকার ইডির বিরুদ্ধে ন্যাজাট থানায় এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ দায়ের করেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। বাড়িতে না ঢোকার পরেও কীভাবে চুরি সম্ভব, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার এজলাসে দাঁড়িয়ে পালটা প্রশ্ন তুললেন ইডির আইনজীবী।
বিচারপতি মান্থা এদিনের শুনানিতে ইডিকে প্রশ্ন করেন, সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে আদৌ ঢুকতে পারেন তদন্তকারীরা? আর সে প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জানুয়ারির ঘটনাক্রম আদালতে তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী এসভি রাজু এবং ধীরাজ ত্রিবেদী। তাঁরা জানান, ওইদিন সকাল ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ শেখ শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছন ইডি আধিকারিকরা। বার বার চেষ্টা করা হলেও ফোনে পাওয়া যায়নি। এভাবে প্রায় ৩০ মিনিট সময় কেটে যায়। সকাল ৮টা ১৫ মিনিট নাগাদ অন্তত ৩ হাজার অনুগামী শাহজাহানের বাড়ির সামনে জড়ো হয়। তারা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উপর হামলা চালায়। ইডি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতেও চলে ব্যাপক ভাঙচুর।
সন্দেশখালি কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ইডির বিরুদ্ধে পৃথক মোট ৩টি FIR দায়ের হয়। হামলার পরেও কেন এফআইআর দায়ের হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইডি। রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং আইনজীবী দেবাশিস রায় জানান, সুপ্রিম কোর্টের ললিতা কুমারী মামলার রায় অনুযায়ী এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এর পর বিচারপতি মান্থা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিচারপতির প্রশ্ন, “ধরুন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপর আক্রমণ হয়েছে। ন্যূনতম অনুসন্ধান না করেই সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করেন? আপনার রায় কী বলছে? পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া এফআইআর দুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। একটা ঘটনার সঙ্গে অন্যটাকে মেলানো যাচ্ছে না।”
বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, “প্রথমে একটি বয়ানে পুলিশ এফআইআর নিল। ওসি স্বাক্ষর করে দিলেন। আবার দুপুরে একজন গিয়ে থানায় উলটো কথা বললেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেও এফআইআর হল। আর তাতেও স্বাক্ষর করলেন ওসি। পুলিশের একবারও মনে হল না একটু আগেই এই একই ঘটনা নিয়ে এফআইআর হয়েছে, আগে যিনি এসেছেন তিনি অন্য কথা বলেছেন। তখন দ্বিতীয়জনকে পুলিশ সে কথা বলবে। তা না করে চোখ বন্ধ করে ওসি স্বাক্ষর করে দিলেন। এটা কী ধরনের বোকামি?” এফআইআরের কপি প্রয়োজনে সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হতে পারে বলেই জানান বিচারপতি। আপাতত আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই মামলায় ইডির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। এদিকে, NIA তদন্তের দাবিতে সন্দেশখালি কাণ্ডে বিজেপির দায়ের করা জনস্বার্থ মামলাও খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.