Advertisement
Advertisement

Breaking News

খুনের মামলা থেকে রেহাই, বেপরোয়া গাড়িচালনায় দোষী সাব্যস্ত সাম্বিয়া

আদালতের রায়ে অখুশি মৃতের পরিবার।

Sambia Sohrab convicted in Red Road case
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 30, 2019 1:01 pm
  • Updated:January 30, 2019 2:13 pm  

অর্ণব আইচ : রেড রোডে বায়ুসেনাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালনায় দোষী সাব্যস্ত সাম্বিয়া সোহরাব। তবে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা থেকে রেহাই মিলেছে তাঁর। ৩০৪A ধারায় অভিযুক্ত সাম্বিয়ার সর্বোচ্চ সাজা হওয়ার কথা ২ বছরের সাজা, সঙ্গে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা। যেহেতু ইতিমধ্যেই ২ বছর সংশোধনাগারে থেকেছে সে, তাই জরিমানার টাকা দেওয়ার পরই তার মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা। আজ ব্যাংকশাল আদালতে এই মামলার রায়ে বেকসুর খালাস হয়েছে সাম্বিয়ার দুই সঙ্গী সোনু, জনি। 

২০১৬ সালে ১৩ জানুয়ারির ঘটনা। বেপরোয়াভাবে ব্যারিকেড ভেঙে প্রচণ্ড গতিতে রেড রোডে ঢুকে পড়েছিল অডি গাড়িটি। পালানোর রাস্তা না পেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়েছিল চালক সাম্বিয়া সোহরাব। গতি আরও বাড়িয়ে সাধারণতন্ত্র দিবসের মহড়া চলাকালীন ধাক্কা দিয়েছিল বায়ুসেনাকর্মী অভিমন্যু গৌড়কে। অডি গাড়ির ধাক্কায় প্রায় কুড়ি ফুট দূরে ছিটকে পড়েছিলেন অভিমন্যু। মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও এক বায়ুসেনা আধিকারিক। এই ঘটনার পর তিন বছর কেটে গিয়েছে। সেদিন চালকের আসনে বসে থাকা মূল অভিযুক্ত রাজনৈতিক নেতা মহম্মদ সোহরাবের ছেলে সাম্বিয়ার ঠাঁই হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু করে এই বছরের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত রেড রোডে বায়ুসেনাকর্মীর মৃত্যু মামলার শুনানি চলে ব্যাংকশাল আদালতে। টানা ১ বছর ১৪ দিন ধরে শুনানিতে ৫১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

Advertisement

                                               পাভলভের ১৬ ‘মানসিক রোগী’র নাম উঠল ভোটার তালিকায়

পুলিশের মতে, অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় মামলার রায় ঘোষণা হল। এই মামলার মূল অভিযুক্ত তৌসিফ সোহরাব ওরফে সাম্বিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩০৭ ধারায় খুন ও খুনের চেষ্টা এবং ১৯৪ বাই ১১৫ মোটর ভেহিক্যালস আইনে পর্যাপ্ত কাগজপত্র ছাড়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও সাম্বিয়ার দুই সঙ্গী নুর আলম ওরফে জনি এবং শাহনওয়াজ খান ওরফে শানুর বিরুদ্ধে রয়েছে ২১২ ধারায় অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া ও ২০১ ধারায় প্রমাণ লোপাট, ১২০বি ধারায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। অভিযুক্ত শানু বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার মূল চক্রী রশিদ খানের নাতি। এ ছাড়াও সাম্বিয়ার বাবা মহম্মদ সোহরাবের বিরুদ্ধেও রয়েছে অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ। সাম্বিয়া ছাড়া বাকি অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত ছিল। যদিও হাই কোর্টের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে ফের ধারা প্রয়োগ করা হয়। আজ আদালত যথাযথ তথ্যপ্রমাণের অভাবে তাদের বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। মামলা চলাকালীন প্রত্যেককে শুনানির সময় আদালতে হাজির ছিলেন বায়ুসেনা আধিকারিকরা।

                                               এসডিএফ বিল্ডিংয়ে আগুন, আতঙ্কিত অফিসকর্মীরা সুরক্ষিতই

১৩ জানুয়ারি, ২০১৬। ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৬টা থেকে ৬টা ১০। খিদিরপুর রোড থেকে প্রচণ্ড গতিতে একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে রেড রোডে আসে অডি গাড়িটি। উত্তর কলকাতার দিকে যাওয়ার পথে বাধা রয়েছে বুঝতে পেরে সাম্বিয়া জে কে আইল্যান্ডের কাছ থেকে গাড়িটি ঘুরিয়ে নেয়। সেসময় রেড রোডে চলছিল সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া। অডি গাড়ি বায়ুসেনাকর্মী অভিমন্যু গৌড়কে ধাক্কা দেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে থেমে যায়। চালকের আসনে ছিল সাম্বিয় সোহরাব। ওই গাড়ির পিছনে একটি স্কোডা গাড়িতে ছিল তার দুই সঙ্গী জনি ও শানু। তারাই সাম্বিয়াকে পার্ক স্ট্রিটের একটি গেস্ট হাউসে নিয়ে যায়। এর পর শানু ও সাম্বিয়া মিলে অন্য একটি গাড়ি করে শহরের বাইরে পালানোর চেষ্টা করে। বাইপাসের ধারে গাড়ি খারাপ হয়। তখন অন্য গাড়িতে উঠে তারা পালায় খড়গপুরে। সেখান থেকে ট্রেন ধরে প্রথমে ঝাড়খণ্ড। সেখান থেকে দিল্লি পালিয়ে যায় শানু। তবে শেষরক্ষা হয়নি। দিল্লি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ সাম্বিয়াকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ শুনানির পর মামলার রায়দানে ঘটনার গুরুত্ব অনেকটা কমে গেল বলে মনে করছেন মৃত অভিমন্যুর পরিবার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement