ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সব্যসাচী দত্তকে সরানো কি আর সময়ের অপেক্ষা? বিধাননগরের মেয়রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে রবিবার তৃণমূল ভবনে যে বৈঠক হল, তা বিশ্লেষণ করে অনন্ত তেমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল৷ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখনই মেয়র পদ থেকে সরানো হল না সব্যসাচী দত্তকে৷ তবে দায়িত্ব কমিয়ে তাঁকে কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করা হল৷ বিধাননগরের মেয়রকে নিষ্ক্রিয় করে, তাঁর সমস্ত দায়িত্ব ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি নির্দেশ দিলেন, সব্যসাচী নন এবার থেকে পুরনিগমের গুরুত্বপূর্ণ নথিতে স্বাক্ষর করবেন তাপস চট্টোপাধ্যায়৷ মেয়র পারিষদদের বৈঠকও ডাকবেন তিনি৷
[ আরও পড়ুন: রণকৌশল বৈঠকে সব্যসাচীর ভূয়সী প্রশংসা, বিজেপি যোগের জল্পনা বাড়ালেন মুকুল]
লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বারবার নিজের মন্তব্যে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন বিধাননগরের মেয়র৷ কখনও দোলের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে৷ কখনও বিজেপি নেতা তথা তাঁর রাজনৈতিক গুরু মুকুল রায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে লুচি-আলুর দম খেয়েছেন৷ কখনও লোকসভা নির্বাচনের পরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন৷ একদম শেষে দলের তৃণমূল সরকারেরই বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন৷ সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করে, গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিধাননগরের মেয়র৷ যাতে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের৷ এরপরই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব৷ বিধাননগরের মেয়রকে বাদ দিয়ে পুরনিগমের সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে রবিবার তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেন ফিরহাদ হাকিম৷ এবং বৈঠক শেষে নাম না করে সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী৷ জানান, ‘‘আমি দলে শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈনিক৷ আমি তৃণমূল দলে ছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত থাকব৷ আমি আশা করব, আমার যাঁরা বন্ধু, যাঁরা একসঙ্গে দল করেছি, সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি, তারা একসঙ্গে কাজ করব৷ তবে কেউ বিশৃঙ্খল হলে, দল তাঁর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবে৷’’
[ আরও পড়ুন: ‘শাসকের অত্যাচারের শিকার হচ্ছে কর্মীরা’, আবেগে কেঁদে ফেললেন দিলীপ ঘোষ ]
এখানেই শেষ নয়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পরিদর্শক হিসাবে এদিনের বৈঠকে এসেছেন তিনি৷ বৈঠকের সমস্ত রিপোর্ট তিনি দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির হাতে তুলে দেবেন৷ সেই রিপোর্ট দেখে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবে শাসকদলের হাইকমান্ড৷ সূত্রের খবর, উক্ত বৈঠকে মেয়রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধাননগর পুরনিগমের প্রায় সমস্ত কাউন্সিলর৷ রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়কের সঙ্গে যে তাঁদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে, তা মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন তাঁরা৷ সূত্রের খবর, কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেই সব্যসাচীর ডানা ছাঁটার সিদ্ধান্ত নেন ফিরহাদ৷ এবং সুকৌশলে বিধাননগরের মেয়রের কোর্টে বল ঠেলেই বিদায় নেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.