সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লুচি-আলুরদম ভোজ খাওয়ানোর পর বিজেপি নেতাদের হাত ধরে পুজো উদ্বোধন, অসুস্থ বিজেপি সাংসদকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যাওয়া। গেরুয়া শিবিরের সৈনিক হিসেবে আনু্ষ্ঠানিক পরিচয়টুকুই যা বাকি। এছাড়া বিধাননগরের বিধায়ক এবং সল্টলেকের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্তের সমস্ত কার্যকলাপই বুঝিয়ে দিচ্ছে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক শিবির বদলাতে তিনি একেকটি ধাপ পেরিয়ে যাচ্ছেন বেশ সাফল্যের সঙ্গেই। সোমবার রাতে বাইপাস সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি জখম বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে দেখতে গিয়ে তা ফের বোঝালেন সব্যসাচী।
সোমবার ছিল গণেশ চতুর্থী। সল্টলেকে প্রতি বছর সিদ্ধিদাতার আরাধনা করে থাকেন সব্যসাচী দত্ত। চমক দিয়ে এবার তিনি সেই পুজোর উদ্বোধন করিয়েছেন বিজেপির একেবারে শীর্ষস্তরের নেতাদের হাত ধরে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায় এবং এরাজ্যের দলের পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন – একেবারে শীর্ষ তিন ব্যক্তিত্ব সোমবার বিকেলে সব্যসাচীর পুজোর মণ্ডপে গিয়ে ফিতে কেটে এসেছেন। সেই মঞ্চেই বোঝা গিয়েছিল, সব মিলেমিশে একাকার হওয়ার বাকি আর কিছু নেই।
আর সন্ধে পেরিয়ে রাত নামতেই সব্যসাচী দত্ত ছুটে গেলেন হাসপাতালে, বারাকপুরের আহত বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে দেখতে। সেখানে ২ জনের মধ্যে প্রায় আধঘণ্টা ধরে কথাবার্তা হয় বলে সূত্রের খবর। আক্রান্ত হওয়ার জন্য বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে গোড়া থেকেই দায়ী করেছেন অর্জুন সিং। তাঁর অভিযোগ, সিপি রাজ্য সরকারের অঙ্গুলিহেলনে নিজের কাজকর্ম চালাচ্ছেন। তাই তাঁকে চক্রান্ত করেই
আক্রমণ হয়েছে। সব্যসাচীর সঙ্গে কথাবার্তার সময়ে সাংসদ তাঁর কাছেও এই অভিযোগ জানান বলে সূত্রের খবর। এছাড়া সব্যসাচী সাংসদের সামগ্রিক শারীরিক পরিস্থিতির কথা খুঁটিয়ে জানতে চান। কথা বলেন পরিবারের সঙ্গেও। অর্জুনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে ফিরে যান সব্যসাচী।
আর এরপর থেকে জল্পনা আরও বেড়েছে। ভোটের আগেই দলবদল প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত। পুরনো বন্ধুত্বের সূত্রে তাঁকে বাড়ি গিয়ে বুঝিয়ে, সেখান থেকে লুচি-আলুরদম নেমন্তন্ন খেয়ে ফিরেছিলেন তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সেদিনের পর খাতায়-কলমে বিজেপি শিবিরে সব্যসাচী নাম না লেখালেও, মুকুল যে মোটেই খালি হাতে ফেরেননি, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল
পরবর্তী ঘটনা পরম্পরায়।
এমনকী বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর এমন গভীর যোগাযোগে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে মেয়র পদ থেকেও ইস্তফা দেন। কিন্তু কুশলী সব্যসাচী তা সত্ত্বেও তৃণমূলের হয়ে কাজ করবেন বলে অন্তত মৌখিক বার্তা দিয়ে রেখেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, এভাবেই আপাতত দু নৌকায় পা রেখে চলতে চাইছেন অভিজ্ঞ, সাবধানী রাজনীতিক সব্যসাচী দত্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.