সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিপিএম পরিচালিত যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় চাপান উতোরের জেরে রাজনীতি ছাড়লেন অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য (Rupa Bhattacharjee)। বুধবার রাতে ফেসবুক পোস্টে তিনি একথা জানিয়ে দেন। লেখেন, “রাজনীতি ছাড়লাম। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলেই জয়েন করছি না। মানুষের ভালর জন্য ন্যায্য কথা বলব। ভাল কাজকে সমর্থন করব। খারাপের প্রতিবাদ করব।”
আরও একটি পোস্ট করেন রূপা, যা অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ও শেয়ার করেছেন। যেখানে দল ছাড়ার কারণ জানিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে একহাত নেন অভিনেত্রী। জানান, মুকুল রায়ের হাত ধরে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। তবে গত দু’বছরে লবির জন্য প্রচুর নাকানি-চোবানি খেতে হয়েছে। গত নির্বাচনে বিজেপির পুরনো কর্মীরা টিকিট পাননি বলেও অভিযোগ করেন রূপা। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যাওয়া তারকারাই টিকিটের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার করেছিলেন। ‘শিল্পীদের রগড়ে দেব’ বলে দিলীপ ঘোষ যে মন্তব্য করেছিলেন, তাঁরও সমালোচনা করেন।
সবশেষে অভিনেত্রী লেখেন, “এই দলের আমি আজ আর কেউ নয়। আপনাদের কথায় কখনই কেউ ছিলাম না। একটা কথা বলে যাই আপনার দলের সম্পদ আপনাদের সাধারণ কার্যকর্তারা। শিল্পীদের কদর করেননি তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু দলের কর্মীদের কদর করুন। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝুন। সুস্থ থাকুন। ভাল থাকুন।”
উল্লেখ্য, গত সোমবার সিপিএম (CPM) পরিচালিত যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিনের অনুষ্ঠানে মিছিলে হাঁটেন অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় (Anindya Banerjee) ও রুপা ভট্টাচার্য। ছিলেন বিমান বসু-সহ সিপিএমের শীর্ষনেতৃত্ব ও টলিউডের বেশ কিছু পরিচিত মুখ। কিন্তু গেরুয়া শিবির ত্যাগ করে রাতারাতি বামফ্রন্টের হাত ধরার বিষয়টি কোনওভাবেই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না ‘কমিউনিস্ট’ শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra), রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়রা (Rahul Banerjee)। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ও অভিমান প্রকাশ করেন তাঁরা। সাফ জানিয়ে দেন, বিজেপি (BJP) ছেড়ে এসে সিপিএমে যোগ দেওয়া কারও সঙ্গে তাঁরা মঞ্চ ভাগ করে রাজি নন। হাল ধরতে ময়দানে নামেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমকে (Mohammed Salim)। ভোট ময়দানে পার্টির হয়ে ঘাম ঝরানো অভিনেতাদের ছাড়া যাবে না, সিদ্ধান্ত আলিমুদ্দিনের।
বিজেপি ফেরত তারকাদের যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের অনু্ষ্ঠানে যোগ দেওয়া নিয়ে যে প্রতিবাদ রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীলেখা মিত্ররা জানিয়েছিলেন, তাতে সমর্থন জানান নিচুতলার নেতাকর্মীরাও। বিতর্কের ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিক্ষুব্ধরা প্রত্যেকেই ভোটের সময় পার্টির প্রচারে দিনরাত এক করেন। সিপিএম শূন্য হওয়ার পরেও পার্টি ছাড়ার কথা ভাবেননি। আজও ডাকলেই ছুটে যান। বিপদের বন্ধুদের কাছছাড়া করতে নারাজ আলিমুদ্দিন। বুধবার পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়, তাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.