ছবিতে আক্রান্ত হাসপাতালের ম্যানেজার বিদ্যুৎ দাস।
কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: চিকিৎসা করাতে এসে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ। পাশাপাশি এক আধিকারিককে মারধরের অভিযোগে তিন মদ্যপ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতেরা ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া। নিউটাউনের একটি কলেজে পড়ার পাশাপাশি তিনজনই সল্টলেকে বাডি ভাড়া করে থাকে। তারা আদতে দিল্লির বাসিন্দা। ধৃতদের নাম আনন্দ কুমার মণ্ডল, অভিনব কুমার ও সুমিত নাগর। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে সল্টলেট উত্তর থানার পুলিশ। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই হাসপাতালে।
পুলিশ জানিয়েছে, যুবক আনন্দ কুমার মণ্ডলের মাথা ফেটে গিয়েছিল। শুক্রবার রাতে অন্য দুই বন্ধু অভিনব ও সুমিত আনন্দকে নিয়ে সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে আসেন। তাঁদের দাবি ছিল, যেমনটি বলা হবে বন্ধুকে তেমনটিই চিকিৎসা পরিষেবা দেবেন হাসপাতালের ডাক্তাররা। বলা হয়, একটি ইঞ্জেকশন দিয়ে আহতকে ছেড়ে দেওয়া হোক। সেই সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাতে রাজি হননি। কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছিল তা জানতেও চান। তবে এসবের কোনও উত্তর দেননি দুই বন্ধু। প্রায় বাধ্য হয়েই হাসপাতালের ম্যানেজার বিদ্যুৎ দাসকে ঘটনাটি জানান ডাক্তারবাবুরা। তিনি খবর পেয়েই জরুরি বিভাগে আসেন। আহত যুবকের সঙ্গে থাকা দুই বন্ধুকে পরিস্থিতি বোঝানোর চেষ্টা করেন বিদ্যুৎবাবু। আনন্দ কুমারের শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করেই তাঁর ভরতি হওয়া প্রয়োজন একথা বলেন। অভিযোগ, এতেই রেগে যায় দুই যুবক। আচমকাই বিদ্যুৎবাবুর উপরে চড়াও হয়ে মারধর করে। তাঁর মাথায় মদের বোতল ভাঙার পাশাপাশি হাসপাতালেও তাণ্ডব চালায় দুই যুবক। আতঙ্কিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সল্টলেক উত্তর থানায় খবর দিলে পুলিশ তিনজনকেই গ্রেপ্তার করে।
এদিন তদন্তে নেমে পুলিশ জানাতে পারে, শুক্রবার তিন বন্ধু সল্টলেক সিটি সেন্টারে গিয়ে বচসায় জড়ায়। মদ্যপ অবস্থাতে হাতাহাতিও করে। পাশাপাশি সিটিসেন্টারে ভাঙচুরও চালানোরও অভিযোগ রয়েছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। সেই সময় আনন্দ কুমারের মাথা ফেটে যায়। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে আহত বন্ধুকে নিয়ে দু’জনে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়। এরপর সোজা সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে এনে বন্ধুর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করে। তাদের ইচ্ছে ছিল কোনওরকম বন্ধুকে সামান্য সুস্থ করেই পালিয়ে যাবে। কিন্তু তাদের কথামতো চিকিৎসা করতে ডাক্তারবাবুর রাজি হননি। তাতেই বিপত্তি। সঙ্গেসঙ্গেই পালটা আক্রমণে যায় তারা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একজনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। আক্রান্ত বিদ্যুৎবাবু ওই হাসপাতালেই ভরতি রয়েছেন। এদিকে ঝামেলা এড়াতে গিয়ে সেই পুলিশের জালেই পড়েছে তিন যুবক। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.