Advertisement
Advertisement

আগুন-আতঙ্ক থেকে শিক্ষা, এবার থেকে প্রতিটি মেট্রোয় থাকবে আরপিএফ

যাত্রীদের উদ্ধারে গড়িমসির অভিযোগ অস্বীকার মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের৷

RPF vigil in Kolkata Metro
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 28, 2018 9:58 am
  • Updated:December 28, 2018 6:00 pm  

সুব্রত বিশ্বাস: পয়লা বৈশাখ, ষষ্ঠীর দুপুর আর তারপরই বৃহস্পতিবারের বিকাল৷ একের পর এক আগুন আতঙ্ক থেকে শিক্ষা নিল মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ৷ এবার থেকে প্রতিটি কামরায় থাকবেন দু’জন করে আরপিএফ৷ কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে যাত্রীরা আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, সেদিকেই খেয়াল রাখবেন তাঁরা৷ এছাড়াও প্রাথমিকভাবে যাত্রীদের উদ্ধারে এগিয়ে আসবেন মেট্রোয় থাকা আরপিএফরা৷ অনেকেরই মত, গতকালের দুর্ঘটনায় মেট্রোর বিরুদ্ধে যাত্রীদের উদ্ধারে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে৷ সেই ক্ষোভ প্রশমিত করতেই নাকি এহেন উদ্যোগ নিয়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ৷ কতদিনই বা মেট্রোর ভিতরে আরপিএফদের দেখা মিলবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অধিকাংশ যাত্রী৷ যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই দাবি মানতে নারাজ৷

[জানেন, মেট্রোয় হঠাৎ বিপদে পড়লে কী কী করা উচিত?]

কিন্তু এখন প্রশ্ন একটাই, কীভাবে ওই এসি মেট্রোয় আগুন লাগল? তদন্তের পরই স্পষ্ট হবে বলে বৃহস্পতিবারই জানান মেট্রোর সিওএম সাত্যকী নাথ। সেই অনুযায়ী তড়িঘড়ি চার সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্তও শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে তদন্তকারীরা মনে করছেন, ট্রেনের নিচের দিকে আগুন লাগে৷ রেল আধিকারিকদের কাছে যে সন্দেহ তীব্রভাবে উঠে এসেছে তা হল রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটি থাকতে পারে। তাঁদের মতে, তীব্র গতিতে চাকার ঘর্ষণেই হয় তো আগুনের ফুলকির উৎপত্তি হয়। এই ফুলকি আন্ডার গিয়ারে পড়ে। কর্তাদের অনুমান, আন্ডার গিয়ার ভালভাবে পরিষ্কার না করায় সেখানে লুব্রিকেটিং ময়লার সঙ্গে জমে স্তর তৈরি করে। যা সহজেই জ্বলনশীল। ফলে আগুন লাগাটা স্বাভাবিক। পাশাপাশি চলন্ত মেট্রোয় এই আগুনের তেজ বেড়ে অতিরিক্ত ধোঁয়ার উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। শর্ট সার্কিট থেকেও আগুন লাগতে পারে। সাধারণত জংশন বক্সে এই শর্ট সার্কিট হয়। সেই ফুলকিও একইভাবে আগুন লাগার সহায়ক বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

[যাত্রীদের উদ্ধারে গড়িমসির অভিযোগ, মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ]

মেট্রোটি এসি ছিল। ফলে এসি বহুক্ষণ চললে আগুন লাগার সম্ভাবনা থেকে যায়। মাঝেমধ্যেই এই বিপত্তি ঘটে মেট্রোর ক্ষেত্রে। তবে বৃহস্পতিবারের ঘটনা অস্বাভাবিক রূপ নেওয়ায় চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে মেট্রো আধিকারিকদের কপালে। আগুন লাগলে প্রাথমিকভাবে তা আয়ত্তে আনার কী ব্যবস্থা রয়েছে মেট্রোর কাছে? মেট্রোর সিপিআরও ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হাইড্রেন রয়েছে। সেখানকার জল দিয়ে মেট্রো কর্মীরা আগুন আয়ত্তে আনেন। রেকটিতে ফায়ার রেজিস্ট্যান্ট মেটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এখনকার রেকগুলিতে আরডিএসও সার্টিফায়েড এই ধরনের মেটেরিয়াল ব্যবহার হয়ে থাকে। জংশন বক্স থেকে জানালা, দরজার আশপাশে ব্যবহৃত সামগ্রী এই জাতীয় হয়ে থাকে। যা আগের রেকগুলিতে ছিল না। তবে আগুন লাগা রেকটিতে এই ধরনের সামগ্রী ছিল কি না তাও দেখছেন তাঁরা। 

[মেট্রোয় আগুন আতঙ্ক, ধোঁয়ায় অসুস্থ বহু যাত্রী]

যাত্রীদের অভিযোগ, আগুন লাগার পর প্রায় কুড়ি মিনিট বাদে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। এত বড় বিপত্তিতে এতটা বিলম্ব নিয়ে যাত্রীরা তীব্র ক্ষোভ দেখালেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সময় লাগাটা খুবই স্বাভাবিক। সিপিআরও ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিকেল পাঁচটায় আগুন লাগে। কন্ট্রোলে খবর আসে ৫.০২ মিনিটে। ৫.০৪ মিনিটে পাওয়ার ব্লক চাওয়া হয়। পাওয়ার ব্লক মেলে ৫.১৯ মিনিটে। ৫.২০ মিনিটে চালকের কামরা দিয়ে যাত্রীদের বের করে আনার কাজ শুরু হয়। এই উদ্ধারকাজ চলে ৫.৫০ মিনিট পর্যন্ত। পাওয়ার ব্লক চাওয়ার সময় থেকে তা পাওয়া পর্যন্ত যতটুকু সময় পাওয়া গিয়েছিল সেই সময়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ দমকল, পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগে খবর দেয়।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement