বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহি জঙ্গল থেকে বনদপ্তরের হাতে ধরা পড়া জিনাত। নিজস্ব ছবি।
নিরুফা খাতুন: সপ্তাহখানেকের ‘বাঘবন্দি খেলা’ শেষে রবিবার বিকালে খাঁচাবন্দি হয়েছে ওড়িশার বাঘিনী জিনাত। এতদিন ধরে সে তিন রাজ্যের একাধিক বনাঞ্চল ঘুরে বেড়িয়েছে। খিদের জ্বালায় নিজের শিকার নিজেই করেছে, তবু বনদপ্তরের টোপ গেলেনি। বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে গিয়ে অবশেষে ধরা পড়েছে সে। কিন্তু এই কদিনের লুকোচুরিতে সে নিজেও কম কাবু হয়নি। শারীরিক, মানসিক ধকল হয়েছে। আর সেই কারণে জিনাতের স্বাস্থ্যপরীক্ষা দরকার। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া থেকে সোজা তাকে নিয়ে আসা হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানার পশু হাসপাতালে। আপাতত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকবে জিনাত। এদিকে সূত্রের খবর, বাঘিনীকে হস্তান্তর করতে চেয়ে ওড়িশা সরকারকে চিঠি দিচ্ছে নবান্ন।
নভেম্বরের শেষদিকে সিমলিপালের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়েছিল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস জিনাত। এরপর সীমানা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গের বনাঞ্চলে ঘুরে বেরিয়েছে তিন বছরের বাঘিনীটি। রেডিও কলার থাকা সত্ত্বেও তার অবস্থান চিহ্নিত করে ধরতে ডাহা ফেল ওড়িশার বনবিভাগ। পশ্চিমবঙ্গের বনদপ্তরের অভিজ্ঞ আধিকারিক ও বনকর্মীদের দক্ষতা, কৌশলে রবিবার জিনাত ধরা পড়েছে। এত ছোটাছুটি, শিকার খোঁজা, ঘুমপাড়ানি গুলির ধকল সামলেও আপাতত সুস্থ রয়েছে বাঘিনী। কিন্তু কিছুটা ট্রমাও রয়েছে তার। শারীরিকভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত সে, তা নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। সেই কারণে আলিপুর পশু চিকিৎসালয়ে তাকে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখানে জিনাতের চিকিৎসায় তৈরি হবে মেডিক্যাল বোর্ড। তাতে সুন্দরবনের বিশেষজ্ঞরাও থাকবেন বলে খবর। সেখান থেকে আরও একটি দল আসছে।
দিন দুই আগে সুন্দরবনের এক বাঘিনীকে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আলিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে একমাত্র এই পশু হাসপাতালেই সবচেয়ে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তাই জিনাতকেও আপাতত কয়েকদিন এখানে রাখা হবে। তার চিকিৎসার পাশাপাশি ডায়েট নিয়েও আলোচনা করবেন বিশেষজ্ঞরা। এখান থেকেই জিনাতকে পাঠানো হবে সিমলিপালের জঙ্গলে। প্রশাসনিক স্তরে সেই প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে চলেছে নবান্ন। ওড়িশা সরকারকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.