সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবীন্দ্র সরোবরে (Rabindra Sarobar) রোয়িং অনুশীলনের সময় জলে ডুবে দুই কিশোরের প্রাণহানির জের। রোয়িংয়ের ক্রু’দের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় বিশেষ নির্দেশিকা তৈরি করল কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের বিশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য রবীন্দ্র সরোবরে বন্ধ রোয়িং অনুশীলন।
শুক্রবার চারটি রোয়িং ক্লাবের সদস্য, পুরসভা, কেএমডিএ’র সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তিনি জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে এসওপি মেনে চলতে হবে। যতদিন না এসওপি তৈরি হয়, ততদিন রোয়িং (Rowing) বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। এসওপি মেনে চলা হচ্ছে কিনা, নজর রাখবে একটি কমিটি। ওই এসওপি’র মধ্যে লেকে রেসকিউ বোট রাখা, লাইফ সেভার ও ডুবুরি মোতায়েন করা, আবহাওয়া দেখে তবেই রোয়িংয়ের অনুমতি দেওয়া, ক্রুদের শারীরিক অবস্থা বোঝার বিষয়গুলি রাখা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে স্কুল পর্যায়ের রোয়িং টুর্নামেন্টের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল রবীন্দ্র সরোবরেই। বস্তুত সেই কারণে বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব, লেক ক্লাব, ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবের পাঁচটি বোট নিয়ে তার আগেরদিন বিকেল থেকে সরোবরে অনুশীলন করছিল ছাত্ররা। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ প্রায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ে আছড়ে পড়ে। রবীন্দ্র সরোবরে উলটে যায় রোয়িং বোট। তাতেই ছিল সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পড়ুয়ারা। প্রাণ হারায় নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়া পূষণ সাধুখাঁ এবং সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়। পূষণের বাবা উল্টোডাঙা ট্রাফিক গার্ডের অতিরিক্ত ওসি। সন্ধে ৭টা নাগাদ দুই কিশোরের নিথর দেহ জল থেকে উদ্ধার করেন দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরাই।
এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের ভিড়। প্রশ্ন উঠেছে, বোট উলটে দুই ছাত্র তলিয়ে যেতেই সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকারী টিম ও রোয়িং কোচরা কি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন? নাকি, উদ্ধারকারী বিপর্যয় মোকাবিলা টিম ও ডুবুরি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছিল? শুধু তাই নয়, দীর্ঘক্ষণ আকাশ কালো করে মেঘ ঘনিয়ে এলেও কেন জলে রোয়িং করতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল ছাত্রদের? ঘটনার তদন্ত করছে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বৈঠকে বসেন পুলিশ কমিশনার। আর যাতে নতুন করে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তাই রবীন্দ্র সরোবরের রোয়িংয়ের ক্ষেত্রে এসওপি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.