রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ভোটের আগে মুড়িমুড়কির মতো বহু তৃণমূল নেতা যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। প্রাণহানির আশঙ্কার কথা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও আদায় করে নিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের বিভিন্ন স্তরের বহু নেতা। কিন্তু ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, ঠিক ভোটের আগে আগে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া অনেক বিজেপি নেতাই নিজের কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন সেলিব্রিটিরাও। শোনা যাচ্ছে, সেইসব অধুনা বিজেপি নেতাদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে এবার দলের অন্দরেই বেঁধেছে কোন্দল। এমনকী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও অনেকের নিরাপত্তা তুলে নিতে চাইছেন।
রাজ্যে এই মুহূর্তে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৫। ১৮ জন সাংসদ আছে। বিধানসভা নির্বাচনের পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বঙ্গে দলের সব বিধায়ককে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর মতো কিছু নেতা আগে থেকেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেতেন। ভোটের পর মোট ৬৬ জন জয়ী বিধায়ককে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়। এই জয়ী বিধায়কদের নিরাপত্তা পাওয়া নিয়ে কারও মনেই কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু প্রশ্নটি উঠছে হেরে যাওয়া নেতাদের নিয়ে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চাইছে ভোটে পরাজিত কিছু কিছু নেতার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হোক। যে সমস্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান তাঁদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন, তাঁদের বরং ব্যবহার করা হোক জয়ী প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে। এখন গোল বাঁধছে, কাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হবে, সেটা নিয়ে।
বিজেপির পুরনো নেতাদের একাংশ বলছেন, সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছেন ভোটের আগে শেষবেলায় দলে যোগদানকারীরা। এমনকি, অনেক নেতার অনুগামীরাও তখন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়ে গিয়েছিলেন! অনেকে আবার দলে যোগ দেওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার শর্ত আরোপ করেছিলেন। সেসব শর্ত সেসময় মেনেও নেওয়া হয়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এদের অধিকাংশই হেরেছেন। যেখানে একটা সময় দলের রাজ্য নেতাদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার চলই ছিল না, সেখানে যাকে তাঁকে এভাবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ায় আসলে দলের ক্ষতিই হয়েছে। তাছাড়া, ভোটের আগে যোগ দেওয়া অনেক নেতাই ভোটের পর যোগাযোগ রাখছেন না। এমনকী দলের ডাকা ভারচুয়াল বৈঠকগুলিতেও এরা থাকছেন না। এই সব নেতাদের অনেকেরই নিরাপত্তা উঠে যেতে চলেছে বলে সূত্রের দাবি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.