Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kolkata

রাতের শহরে চালকবিহীন ‘ভূতুড়ে’ রোড রোলার, চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত ১

ভূতের ভয়ে তটস্থ উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের গোয়াবাগান বস্তি এলাকার মানুষজন।

Road Roller kills one in Kolkata Beadon Street Area | Sangbad Pratidin

প্রতীকী ছবি

Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:April 17, 2021 9:26 pm
  • Updated:April 17, 2021 9:26 pm  

অর্ণব আইচ: রাতের কলকাতায় ভূতুড়ে রোড রোলার? নাকি রোলারে ভূতের ধাক্কা? ‘গাড়ি’র কোনও চালক নেই। অথচ হঠাৎই পিছন দিকে গড়িয়ে চলতে শুরু করে চালকবিহীন ভারী রোড রোলারটি। চিৎকার শুনে কয়েকজন বাসিন্দা দেখেন, রোলারের পিছনের লোহার চাকায় পিষ্ট হয়ে গিয়েছেন এক ব্যক্তি। গভীর রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটল উত্তর কলকাতার (Kolkata) বিডন স্ট্রিটের গোয়াবাগান বস্তির কাছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম খোকন দাস (৪০)। পেশায় তিনি ভ্যান চালক। এই মৃত্যু নিয়ে একদিকে যেমন রহস্য সৃষ্টি হয়েছে, তেমনই এলাকাজুড়ে দেখা গিয়েছে ভূতের আতঙ্ক। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন, রোড রোলারটিতে ছিলেন না কোনও চালক। কাউকেই গাড়ির মধ্যে দেখাও যায়নি। অথচ কীভাবে সেটি স্টার্ট নিয়ে পিছন দিকে যেতে শুরু করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শনিবার এই গাড়িটি পরীক্ষা করেন বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার তখন ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটা পেরিয়েছে। ওইদিন দুপুরেই বিডন স্ট্রিটের গোয়াবাগানে রাস্তা তৈরির কাজ চলছিল। পিচ ঢালা হয়েছিল রাস্তায়। রাস্তা সমান করার জন্য নিয়ে আসা হয় রোড রোলার। চালক বিকেল পর্যন্ত রোলার নিয়ে রাস্তা সমান করার কাজ করেন। এর পর তিনি সেটি রাস্তার ধারে সেটি রেখে চলে যান। শনিবার ফের কাজ শুরু করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এর মধ্যেই ঘটে যায় অঘটন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী দিলীপ ঘোষ! কটাক্ষ দেবাংশুর, বিঁধলেন মোদি-শাহকেও]

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে বেশিরভাগ মানুষই ঘুমিয়ে পড়ে ছিলেন। খোকন মদ্যপান করতেন। সম্ভবত তিনি রোলারের পিছন দিকে বসে প্রস্রাব করছিলেন। রাস্তায় তখনও কয়েকজন ছিলেন। তাঁরা হঠাৎই রোলারটির আওয়াজ শুনে দেখেন, সেটি পিছন দিকে চলছে। চালকবিহীন ‘ভূতুড়ে’ রোলারটিকে ওভাবে চলতে দেখে অবাক হয়ে যান। পরমুহূর্তে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। এক জনের আর্তনাদ শুনে তখনই ছুটে যান রোলারের দিকে। দেখেন, রোলারের চাপায় পিষ্ট হয়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। ততক্ষণে ঘুম ভেঙে ছুটে এসেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরাই খোকন দাসকে শনাক্ত করেন।

খোকন ওই এলাকারই বাসিন্দা। ছুটে আসেন তাঁর প্রতিবেশী ও বাড়ির লোকেরাও। খবর যায় বড়তলা থানায়। পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রোড রোলারে পিষ্ট হওয়ার পর দেহটি ভাল করে চেনা যাচ্ছিল না। এক তাল মাংসপিণ্ড বলে মনে হচ্ছিল। এই ঘটনাটিকে ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। কেউ বলছেন, রোলারটিকে ভূত ধাক্কা দিয়েছে। আবার কেউ বা বলছেন, ভূত চালাচ্ছিল রোলার। যদিও সেই যুক্তি মানতে নারাজ পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁরা জেনেছেন, খোকন দাস ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন।

[আরও পড়ুন: ‘অবৈধভাবে আড়ি পাতা হচ্ছে মমতার ফোনে’, অডিও কাণ্ডে কমিশনে নালিশ তৃণমূলের]

প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের অভিমত, কোন রোলার বা গাড়ি হঠাৎই নিজের থেকে স্টার্ট নিতে পারে না। সম্ভবত কোনও ব্যক্তি মদ্যপান করার পর রোলারে উঠে সেটির কোনও লিভার টেনে দেয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় গাড়িটি। যেহেতু ব্যাক গিয়ার করা ছিল, তাই সেটি পিছন দিকে চলতে শুরু করে। খোকন রোলারের পিছনে প্রস্রাব করছিলেন। তিনি আর উঠতে পারেননি। পিষ্ট হয়ে যান রোলারে। আবার এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না যে, খোকন দাস নিজেই রোলারের উপর বসে মদ্যপান করছিলেন। অথবা, মদ্যপান করার পর গাড়িটির ওপরে উঠে বসে ছিলেন। তিনি নিজেই সেটিতে স্টার্ট দেন। গাড়িটি চলতে শুরু করলে বেসামাল হয়ে পড়ে যান রোলারের ভারী চাকার তলায়। তবে, কারণ যাই হোক না কেন ঘটনাটি ঘিরে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, পারিবারিক গোলমালের জেরে স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন না খোকন। যদিও ময়নাতদন্তের পর দেহটি স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ খোঁজ করছে। এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন আধিকারিকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement