Advertisement
Advertisement
Sandip Ghosh

হাই কোর্টে মানববন্ধনে সন্দীপের উকিলও

আইনজীবী মহলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পেশা ও সে সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা এবং সমর্থন এক নয়।

RG Kar Medical College & Hospital: Sandip Ghosh's lawyer joins in human chain
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 5, 2024 5:43 am
  • Updated:September 5, 2024 5:43 am  

গোবিন্দ রায়: আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদী কর্মসূচির জেরে বিকেল থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়া নিয়ে যখন কোনও কোনও মহলে সমালোচনা তুঙ্গে। তখন হাই কোর্টে মানববন্ধনে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষের উকিলের উপস্থিতি নতুন বিতর্ক সামনে এনেছে। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে যে আন্দোলন হচ্ছে সেখানে কেন তাঁরই আইনজীবী হাজির, সেই প্রশ্ন তুলে কটাক্ষে বিদ্ধ করা হয়েছে আইনজীবী মহলকে। কিন্তু আইনজীবী মহলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পেশা ও সে সংক্রান্ত বাধ‌্যবাধকতা এবং সমর্থন এক নয়।

পেশার খাতিরে একজন আইনজীবী হিসাবে বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য সন্দীপ ঘোষের হয়ে মামলা লড়ছেন। এদিন আইনজীবী সমাজের পক্ষ থেকে আর জি কর কাণ্ডের জুনিয়র ডাক্তাররা যে প্রতিবাদ আন্দোলনে শামিল হয়েছেন, তার প্রতি সংহতি ও একাত্মতা জানাতে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। অন‌্য সব আইনজীবীর মতো বার অ‌্যাসোসিয়েশনের সদস‌্য হিসাবে বিশ্বরূপ সেই কর্মসূচিতে যোগ দেন। একজন আইনজীবী হিসাবে তিনিও আর জি কর কাণ্ডের বিচার চান, তাই হাই কোর্ট চত্বরে শামিল মানববন্ধন কর্মসূচিতে। 

Advertisement

উল্লেখ‌্য, সম্প্রতি আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে। সেই গ্রেপ্তারির পর মঙ্গলবার সন্দীপের হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিশ্বরূপ। এর আগে নিরাপত্তা চেয়েও সন্দীপ যখন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তখনও তাঁর হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী বিশ্বরূপ। এছাড়াও আর জি কর কাণ্ডে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার বিরুদ্ধেও সন্দীপের তরফে হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন বিশ্বরূপ। তাঁর বক্তব্য ছিল, সংবাদমাধ্যম তাঁর মক্কেল সম্পর্কে ‘অসত্য’ এবং অবমাননাকর খবর প্রকাশ করছে। তার ফলে তদন্ত যেমন প্রভাবিত হচ্ছে তেমনই সন্দীপের সম্মানহানি হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষও তৈরি হচ্ছে। যদিও তাঁর সেই অভিযোগ কার্যত খারিজ করে বিচারপতি শম্পা সরকার গত ২২ আগস্ট তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, মামলাকারী এমন কোনও তথ্য দেখাতে পারেননি যা থেকে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বোঝা যায়।

[আরও পড়ুন: জ্যোতিপ্রিয়র দ্বিতীয়বার স্বাস্থ্যপরীক্ষার নির্দেশ, ডেডলাইন বাঁধল হাই কোর্ট]

এদিকে, আর জি কর কাণ্ড নিয়ে নাগরিক সমাজের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে পথ অবরোধ, মিছিলের দাপটে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। মূলত প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে শহর কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন শহরে বিক্ষিপ্তভাবে ‘জাস্টিস ফর আর জি করে’ ইস‌্যুতে মিছিল করা হচ্ছে। শুধু ব‌্যস্ত রাজপথ নয়, স্থানীয়ভাবে ছোট ছোট পাড়ায়, গলির মধ্যেও মিছিল করা হচ্ছে পুলিশ বা প্রশাসনকে না জানিয়ে। সঙ্গে চলছে ক্ষণস্থায়ী বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে যখন-তখন যেখানে সেখানে পথ অবরোধ। ফলে দিনভর যানজটে নাজেহাল বিভিন্ন কাজে বেরনো আমজনতা। দুর্ভোগের শিকার বেশি হতে হচ্ছে স্কুলের ছুটি শেষে শ্রান্ত খুদে পড়ুয়া, অফিস থেকে ঘরমুখী জনতা, হাসপাতাল বা জরুরি চিকিৎসার জন‌্য ঘর থেকে বেরনো অসহায় মানুষজন। যা নিয়ে ক্ষোভের আগুন রোজই বাড়ছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ‌্যাপের মতো সোশ‌াল মিডিয়ায়।

এ বিষয়ে একটি অবাক করা তথ‌্য উঠে আসছে গোয়েন্দা পুলিশের নিজস্ব সূত্রে। পুলিশের সাইবার সেল ও গোয়েন্দা সূত্র বলছে, এই আগাম ঘোষণা ছাড়া মানববন্ধন, মিছিল, পথ অবরোধের পিছনে সক্রিয় বিভিন্ন বাম ও অতি বাম সংগঠন। আছে পরিচয় গোপন করে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরও। এদের প্রতি সহানুভূতিশীল বা নিজস্ব বৃত্তে সক্রিয় কিছু মানুষ সামাজিক মাধ‌্যমে বিভিন্ন গ্রুপে এই বিষয়ে আন্দোলনের ডাক দিচ্ছে। সংবাদমাধ‌্যমের নিজস্ব অনুভবও একই। ফলশ্রুতিতে শুধু আমজনতার দৈনন্দিন কাজকর্ম লাটে উঠছে, এমনটাই নয়, বিপাকে পড়েছেন বহু দিন আনি দিন খাই পরিবারও।

যেমন বছর পঞ্চাশের মনসুর মিঞা। গত ৩০ বছর সেন্ট্রাল অ‌্যাভিনিউয়ের ফুটপাথে ডালা পেতে ফল বেচেন বেলডাঙার প্রবীণ। দুপুরে টিফিন করতে বেরনো অফিসবাবু, পথচলতি মানুষ, এ চত্বরে কাজে বা ঘুরতে আসা তরুণ-তরুণীদের ভিড়ে মরশুমি সে সব ফলের কাটতি ভালোই। ফল বেচার টাকা থেকে যেটুকু বাড়িতে পাঠাতে পারেন, তাতে চার ছেলেমেয়ের পড়াশোনা, হাটবাজার, বর্ষায় ঘরের চাল ছাওয়াটা হয়েও যায় কোনওমতে। আপাতত হপ্তাখানেক বিক্রিবাটা শূন‌্যতে। এমাসে সেভাবে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারেননি। স্বভাবিকভাবেই মেজাজ খিঁচড়ে রয়েছে রাগ-বিরক্তিতে। বিজেপির টানা ধরনায় ধর্মতলার শুকদেব যাদবের চায়ের দোকান, প্রকাশ মণ্ডলের লেবু-জলের ব‌্যবসা মাছি তাড়াচ্ছে। রুবির মোড়ে বেণু হাজরার ঘুগনি-পরোটার দোকান শুনশান। সূত্রের খবর, বড়বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকার ব‌্যবসায়ী সংগঠনগুলি এবার পালটা প্রতিরোধে নামা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।

[আরও পড়ুন: ‘বাংলাকে অশান্ত করতে চায় অপশক্তি’, দলীয় কর্মীদের সতর্ক করলেন কুণাল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement