অর্ণব আইচ: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে শিয়ালদহ আদালতে দাঁড়িয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেল মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। সূত্রের খবর, এই ঘটনার সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। তরুণী চিকিৎসককে চিনতই না বলেও জানায় সে। সঞ্জয় আরও দাবি করে, সেমিনার হল থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া ব্লুটুথ হেডফোনটিও তার নয়।
শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচারকের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সে। উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা। সূত্রের খবর, প্রতিবারের মতো এবারও নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করে সে। বলে রাখা ভালো, এর আগেও একাধিকবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। ফাঁসানো হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে সে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বছরের ২ জানুয়ারি। ওইদিন সিবিআই এবং অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনবে আদালত। এছাড়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী লিখিত আকারে নিজেদের অবস্থান জানাবেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের নাইট ডিউটি ছিল। পরদিন হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে তরুণী চিকিৎসককে। এই ঘটনায় গোটা দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ মূল অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয় রায় নামে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে। যদিও এই নৃশংস ঘটনার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দিনচারেকের মাথায় ঘটনার তদন্তভার নেয় সিবিআই। তারপর তদন্ত করে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
তবে চার্জশিট জমা দিতে না পারায় সম্প্রতি দুজনকেই জামিন দেয় আদালত। তার ফলে অভিজিৎ মণ্ডলের জেলমুক্তিও ঘটেছে। আর জি করের আর্থিক মামলাতেও নাম জড়ানোয় জামিনের পরেও শ্রীঘরেই দিন কাটছে সন্দীপ ঘোষের। তবে এই দুই অভিযুক্তের জামিনের পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর জি করের নৃশংস ঘটনার পর রাজ্যে ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ধর্ষণ ও খুন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করেছে রাজ্য সরকার। তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুন মামলার তদন্তে এখনও বিশ বাঁও জলে সিবিআই। কবে মিলবে সুবিচার, ঘটনার মাসচারেক পরেও সে উত্তর অধরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.