ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ: দুদফায় মোট ৬ দিনের সিবিআই হেফাজত শেষ হয়েছে শুক্রবার। এদিনই ধর্ষণ ও খুনের তথ্য লোপাট, সরকারি কর্তব্যে গাফিলতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযুক্ত আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে শিয়ালদহের এসিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। সওয়াল-জবাবের সময় বিচারকের একাধিক প্রশ্নের জবাব ঠিকমতো দিতে পারেননি সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। তাতে ক্ষুব্ধ বিচারক রীতিমতো ‘দার্শনিক’ মন্তব্য করেন। বলেন, ”জেল মানুষের কাছে আসে না। মানুষকে জেলে যেতে হয়। কেউ একদিন জেলে থাকলেও সারা জীবন তাঁর আতঙ্ক থেকে যায়।”
এদিন সন্দীপ ঘোষের নারকো অ্যানালিসিস পরীক্ষার আবেদন জানায় সিবিআই। একইসঙ্গে শুক্রবার সিবিআইয়ের পক্ষে শিয়ালদহ আদালতে অভিজিৎ মণ্ডলেরও পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে দুজনের মত নেওয়ার জন্য আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। যদিও সূত্রের খবর, দুজনই ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন যে, তাঁরা এই পরীক্ষায় রাজি নন।
এদিন আদালতে আবেদন জানিয়ে সিবিআই জানায়, টালা থানা ও আর জি কর হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ থেকে বেশ কিছু তথ্য সামনে এসেছে। আর জি করের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বেশ কয়েকজন সন্দেহজনক ব্যক্তির চলাফেরা সিবিআইয়ের নজরে এসেছে। সন্দীপ ও অভিজিতের মধ্যে মোবাইলে সবসময় যোগাযোগ হতো, সেই তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে।
দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারক জামিন দেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিন খুন ও ধর্ষণের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ভারচুয়ালি আদালতের সামনে পেশ করা হয়। তার জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী। তাকেও ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিন বিচারক সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, সন্দীপ ও অভিজিৎ কি ধর্ষণ ও খুন, নাকি তথ্য ও প্রমাণ লোপাট ষড়যন্ত্রকারী? এই ব্যাপারে সিবিআই কী তথ্য হাতে পেয়েছে? সিবিআই এমন কোনও তথ্য পেয়েছে যে, সন্দীপ ও অভিজিৎ আগে জানতেন যে, আগে থেকেই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা হতে চলেছে। সিবিআইয়ের জবাব, এখনও তাঁদের কাছে সেরকম কোনও তথ্য নেই। বিচারকের প্রশ্ন, ওসি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ বলে তাঁকে সিবিআই ষড়যন্ত্রকারী বলে মনে করছে? সিবিআইয়ের ব্যাখ্যা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। ধর্ষণ-খুন ও প্রমাণ লোপাট বা ষড়যন্ত্র আলাদা বিষয়। সবমিলিয়ে বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় সিবিআইকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.