ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ: আর জি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিচারপর্বে কতজনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ, আদালত সব সাক্ষীর সাক্ষ্য নাও নিতে পারে, এমন খবর সিবিআই সূত্রে। হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে শিয়ালদহ আদালতের এডিজে-র এজলাসে চার্জ গঠন হয়েছে।
১১ নভেম্বর, সোমবার থেকে এই ধর্ষণ ও খুনের মামলার বিচারপর্ব শুরু। বিচারপর্বে সাক্ষীদের বক্তব্য বা সাক্ষ্য নেওয়া মূল প্রক্রিয়া। কারণ, সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই বিচারের প্রক্রিয়া এগোবে। আবার ওই সাক্ষীদের বয়ান অনুযায়ী সঞ্জয় রায়ের হয়ে লড়তে পারেন তাঁর আইনজীবীরা। আপাতত এই মামলায় সঞ্জয়ের হয়ে লড়ছেন রাজ্য সরকারের লিগাল এইডের আইনজীবীরা। গত ৭ অক্টোবর সিবিআই সঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট পেশ করে। ওই চার্জশিটের সঙ্গেই পেশ করা হয় ১২৮ জন সাক্ষীর তালিকা। তবে প্রয়োজনে আরও কারও সাক্ষ্য প্রয়োজন হলে তাঁর নাম আদালতে পেশ করে জানানো হবে। তাঁকে সাক্ষী করার জন্য আদালতের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হবে।
সিবিআই সূত্রে খবর, মামলার খাতিরেই যে ব্যক্তিদের সাক্ষ্য নেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে, তাঁদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন চিকিৎসক। এছাড়া রয়েছেন ৩৫ জন পুলিশকর্মী। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় সঞ্জয়ের এক দিদিও। এছাড়া সঞ্জয়ের সঙ্গে তার যে বন্ধু সিভিক ভলান্টিয়ার যৌনপল্লিতে গিয়েছিলেন ও গভীর রাত পর্যন্ত মদ্যপান করেন, তাঁরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এমন একজন পুলিশ আধিকারিক, যিনি সঞ্জয় রাইয়ের ‘মেন্টর’ বলে পরিচিত, যাঁর নির্দেশে পুলিশ পরিবারের রোগী দেখার জন্য সঞ্জয় আর জি কর হাসপাতালে যেত, সিবিআই তাঁরও সাক্ষ্য গ্রহণ করে। এছাড়া সিবিআইয়ের সুপারিশে ডিজি (হেলথ সার্ভিস) এইমসের ফরেনসিক মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. আদর্শ কুমারের নেতৃত্বে দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হসপিটাল, লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ, মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি ‘মাল্টি ইন্সটিটিউশনাল মেডিক্যাল বোর্ড’ বা এমআইএমবি তৈরি করেন। এই টিমের সদস্য, এইমসের কয়েকজন চিকিৎসক, কেন্দ্রীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নামও রয়েছে সাক্ষীদের তালিকায়।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের কাছে খবর, বিচারপর্ব চলার সময় এই ১২৮ জনের মধ্যে সব সাক্ষীকে আদালত নাও তলব করতে পারে। সিবিআইয়ের ধারণা, বিচারপর্বে মেডিক্যাল বোর্ড বা কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য নাও নিতে পারে আদালত। তবে নির্যাতিতার সহকর্মী চিকিৎসক ও পুলিশের একটি বড় অংশের সাক্ষ্য গ্রহণ হতে পারে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ঘনিষ্ঠদের সাক্ষ্য নেওয়া হতে পারে। আইন অনুযায়ী সবার শেষে অভিযুক্ত সঞ্জয়কে নিজের পক্ষে বয়ান দেওয়ার সুযোগ দিতে পারে আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.