অর্ণব আইচ: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অবশেষে সমস্ত নথিপত্র জমা দিল সিবিআই। আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের ধমকেই হল কাজ। ভর্ৎসনা শোনার পর শনিবার আদালতে ১০০ শতাংশ নথিপত্র জমা দিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
এদিন শুনানির শুরুতে আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, চার্জশিট সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র নিয়ে এসেছেন তদন্তকারীরা। পেন ড্রাইভ কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অভিযুক্তদের নথি দিতে পারবে সিবিআই। এরপর বিচারক অভিযুক্তর আইনজীবীদের প্রশ্ন করেন, “আপনারা পেন ড্রাইভে নিতে পারবেন?” ১০০ শতাংশ নথিপত্র সিবিআই দিতে পারবে কিনা, পালটা সে প্রশ্ন করে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী। বিচারক জানান তিনি মেলে নথিপত্র নিতে পারেন।
এদিকে, আর জি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী। সেই প্রসঙ্গ শনিবার তোলেন বিচারক। সন্দীপ ঘোষের আইনজীবীকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, গতকাল আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতকে না জানিয়ে কেন হাই কোর্টে গিয়েছেন তিনি। আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের আইনজীবী সাফ জানান, তিনি জাননি হাই কোর্টে। অন্য আইনজীবী গিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির তদন্তকারী আধিকারিককে শোকজ করে আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। অভিযোগ, রাজ্যের তরফে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়। তা আলিপুর আদালতকে না জানিয়ে হাই কোর্টে যায় সিবিআই। এই মামলার শুনানিতে সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, “এই মামলায় প্রথম থেকেই সিবিআই অসহযোগিতা করছে। গত ২৭ জানুয়ারি রাজ্যের তরফে চার্জ গঠনের অনুমতি মেলে। তারপর তিনদিন কেটে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও আদালতে কিছুই জানানো হয়নি।” একথা শুনে বিরক্ত হন বিচারক। সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক মণীশ উপাধ্যায়কে এই প্রসঙ্গে বিচারক বলেন, “হাই কোর্ট জানতে পারল কিন্তু ট্রায়াল কোর্ট জানাল না? ট্রায়াল কোর্টকে বাইপাস করে হাই কোর্টে যাচ্ছেন?” আগামী সাতদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে হবে সিবিআইকে।
এরপর শুক্রবার এই মামলায় ফের সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত। নির্দেশের পরেও কেন বিশেষ সিবিআই আদালতে ১০০ শতাংশ নথি জমা দিতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা সে প্রশ্ন করেন বিচারক। সিবিআইয়ের সাফাই, জেরক্স করাতে সময় লাগছে বলেই নথিপত্র আদালতে জমা দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.