স্টাফ রিপোর্টার: ছটে (Chhath Puja) দূষণ থেকে রক্ষা পেল রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবর। কিন্তু শব্দদানবের হাত থেকে রেহাই পেলেন না শহরবাসী। কালীপুজো ও দীপাবলি স্বস্তি দিলেও ছটে শব্দবাজির তাণ্ডব চলবে তা নিয়ে আশঙ্কা ছিলই। এই আশঙ্কা যে অমূলক ছিল না তা রবিবারই বোঝা গেল।
রবিবার ছটের শহরজুড়ে চলল শব্দদানবের তাণ্ডব। রাতভর শব্দবাজির দাপটে ঘুম উড়ে যায় শহরবাসীর। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের জেরে কালীপুজোয় বৃষ্টি চলায় এবার শব্দবাজির দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কম ছিল। বৃষ্টি কমার পর কিছু কিছু এলাকায় শব্দবাজি চলেছিল ঠিকই। তবে ছটপুজোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রবিবার সন্ধে থেকে ছটপুজো শুরু হয়। বিকেল থেকে পুণ্যার্থীরা পুজোর সামগ্রী নিয়ে ঘাটে ভিড় জমান। ছটেও রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সবুজ বাজিকে ছাড় দিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এদিন শহরে দেদার শব্দবাজি পুড়ল। সেইসঙ্গে ডিজের তাণ্ডব।
পরিবেশবিদ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, কালীপুজোয় (Kali Puja 2022) শব্দদূষণের মাত্রা কম হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ছিল। ছটে শব্দবাজির তাণ্ডব চলবে এটা আশঙ্কা ছিল। আর সেটাই সত্যি হল। ছটে রাতভর শব্দবাজির উপদ্রব চলে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ জানান, ছটে দূষণ থেকে রবীন্দ্র সরোবরকে বাঁচানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু শব্দদূষণ থেকে মুক্তি মেলেনি। ছটের রাতে শহরে দেদার শব্দবাজি পোড়ানোর অভিযোগ এসেছে। তাঁর কথায়, শব্দবাজি শুধু শব্দদূষণ ছড়ায় তা নয়। বাতাসেও দূষণমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
রবীন্দ্র সরোবরে ও সুভাষ সরোবরে ছটপুজোয় ভিড় জমাতেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। ছটের দূষণে ভরে উঠত দুই লেক। জাতীয় পরিবেশ আদালত এই দুই লেকে ছটপুজো নিষিদ্ধ করেছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করেও রবীন্দ্র ও সুভাষ সরোবরে ছটপুজো করা হয়েছিল। এবার অবশ্য ছটপুজোর আগের দিন শনিবার সন্ধে থেকে রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবরের গেট বন্ধ করা হয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত প্রবেশ বন্ধ। লেকের বিকল্প হিসাবে জলাশয়ে ছটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে জলাশয় নেই সেখানে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করে ছটপুজো চলে।
কলকাতা পুরসভা (KMC) প্রায় ১৫টি কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করেছে। মোট ৪৭টি স্থায়ী ও অস্থায়ী ঘাটে এদিন ছটপুজো চলে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম কয়েকটি ঘাট ও জলাশয় ঘুরেও দেখেন। মেয়র জানান, ছটের আগেই রবীন্দ্র সরোবর ও সুভাষ সরোবর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই আর সেখানে কেউ ঢোকার চেষ্টাও করেননি। লেকের পরিবর্তে তাঁরা জলাশয়ে পুজো করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.