কৃষ্ণকুমার দাস: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে এবার দ্রুত পুর্ণনির্মান শুরু হচ্ছে সাউথ সিটির উলটোদিকে পোদ্দার পার্কে সরকারি আবাসনের। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দপ্তরের অধীন ৬০ বছরের বেশি পুরানো ১২টি টাওয়ারের ৩৮৪টি জরাজীর্ণ ফ্ল্যাট নতুন করে গড়বে কেএমডিএ। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পুরানো বৈধ বাসিন্দাদের সকলকেই নিঃশর্ত দলিলে নতুন বাড়িতে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে। বিপজ্জনক বাড়িতে আর একমুহূর্ত বাসিন্দাদের থাকতে দিতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সরকারি খরচেই আবাসনগুলি তৈরি করে নিঃশর্তে মালিকানা দেওয়া হবে।” মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তে বাসিন্দাদের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি দুই মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং বিধায়ক দেবাশিস কুমারকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর মৌসুমি দাস।
উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দপ্তরের অধীনে ১৯৫৫ সাল থেকে পোদ্দার পার্কে ১২টি টাওয়ার তৈরি শুরু হয়। ১৯৬০ সালের শেষ থেকে বাসিন্দারা এসে বসবাস করতে শুরু করেন। নব্বই দশকের শেষদিক থেকে বাড়িগুলি জরাজীর্ণ হতে শুরু করলেও তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সংস্থা কেআইটি আবাসনটি সংস্কারে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ। পোদ্দার পার্ক টেনেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করলেও বাম জমানায় বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে বাসিন্দাদের আবেদনে খুব একটা কর্ণপাত করেনি। ২০০৯ সালে তৎকালীন স্থানীয় বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় টেনেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই শুরু করেন।
রাজ্যে পরিবর্তনের পর উদ্বাস্ত ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের সচিব মনোজ পন্থকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিয়ে এসে পুরসভার বরো ১০-এর অফিসে পুণর্বাসন নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন শোভনদেব। সিদ্ধান্ত হয় কেএমডিএ এই প্রকল্প তৈরি করবে, দ্রুত নির্মাণ শুরু হবে। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর কেটে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তীতে স্থানীয় বিধায়ক হয়ে দেবাশিস কুমারও বাসিন্দাদের কথা ভেবেই টেনেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে নিয়ে উদ্বাস্তু পুনর্বাসন ও অর্থদপ্তরের ছোটাছুটি শুরু করেন। সক্রিয় পুরমাতা মৌসুমি দাসকে সঙ্গে নিয়ে একাধিকবার এলাকায় গিয়ে বৈঠক করেন বিধায়ক। আশ্বস্ত করেন বাসিন্দাদের। ইতিমধ্যে বিকল্প ফ্ল্যাট তৈরি করে কেএমডিএ পুরানো বাড়ি ভেঙে নতুন টাওয়ার তৈরির কাজ শুরু করেছে। এদিন মন্ত্রিসভায় নিঃশর্ত দলিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘দ্রুত কাজ শুরু দাও।’ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে আবেগাপ্লুত টেনেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দেবাশিস ধর ও নয়নদ্বীপ দত্ত জানিয়েছেন, “বাসিন্দাদের নিঃশর্ত দলিলের দাবি পূরণে চন্দ্রিমাদি, বিধায়ক ও পুরমাতার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.