সুদীপ রায় চৌধুরী: অযোধ্যায় বহু প্রতীক্ষিত রামমন্দির উদ্বোধনের উন্মাদনাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে রাজ্যজুড়ে কর্মসূচি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি। কিন্তু উন্মাদনা তো দূরের কথা, সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং রাজ্য নেতৃত্বের চূড়ান্ত অদক্ষতায় মানুষের মনে সামান্য সাড়া ফেলতেও পারল না সেই উদ্যোগ। এমনকী, বিরোধী দলনতো শুভেন্দু অধিকারী এদিন দিনভর একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে দাপাদাপি করলেও সব কটি ফ্লপ হয়!
সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে অকাল দীপাবলী পালনের আবেদন জানালেও, এদিন সন্ধের পরও রাজ্য বিজেপি কার্যালয় অন্ধকারে ঢাকা ছিল। রাতের দিকে তিনটি হ্যালোজেন লাগিয়ে দায়িত্ব সারে রাজ্য নেতৃত্ব। যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে দলের প্রবীন কর্মী-সমর্থকরা।
সোমবার সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পালদের নিজেদের সংসদীয় এলাকায় পদযাত্রা করতে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন জেলায় গেরুয়া সমর্থকরা নিজেদের মতো করে যজ্ঞ-পুজো-শোভাযাত্রা করেছেন। নন্দীগ্রাম ছেড়ে কলকাতায় এসে দিনভর একাধিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সকালে রামের নামে উত্তর কলকাতার বৈকুণ্ঠ মন্দির থেকে জোড়াসাঁকোর রামমন্দির পর্যন্ত মিছিলে যোগ দেন তিনি। পরে মধ্য কলকাতার একটি পার্কে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান দেখেন। বিকেলে হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর গঙ্গাঘাটে মহাআরতি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। প্রদীপ জ্বালিয়ে গঙ্গাপুজো করেন। আরতি দেখেন। সন্ধেয় দক্ষিণ কলকাতায় যোগ দেন একাধিক কর্মসূচিতে। কিন্তু সকাল বা বিকেল, শুভেন্দুর কোনও বেলার কর্মসূচিতেই কিন্তু লোক জমেনি। তারপরও অবশ্য সেই ‘ফ্লপ’ কর্মসূচির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে ‘কলকাতায় সুনামি ঝড়’ বলে দাবি করতে দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিশেষ পুজোপাঠ হয়েছে। তবে এদিন চোখে পড়েছে ৬, মুরলিধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন ছবিটা। রামমন্দির আন্দোলনের সময় বাংলায় আন্দোলনের স্নায়ুকেন্দ্র ছিল এই বাড়িটিই। অথচ সল্টলেকে দলের নির্বাচনী কার্যালয়কে আলো-ফুলে সাজানো হলেও মূল রাজ্য কার্যালয় ছিল নিস্প্রদীপ। সন্ধে সাতটা নাগাদ টনক নড়ায় আলো লাগাতে লোক পাঠানো হয় মুরলিধর সেন লেনে। কোনওমতে তিনটি হ্যালোজেন বাতি জ্বালিয়ে নিয়মরক্ষা করা হয়। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বক্তব্য, মানুষের মন থেকে বিজেপিকে মুছে দেওয়ার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ অন্তর্ঘাত করছে। এই ঘটনা তারই প্রমাণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.