অর্ণব আইচ: কলকাতায় চিনের (China) নতুন রাষ্ট্রদূত এইচ ই জু উই (H.E. Xu Wei)। বেজিংয়ের পাঠানো কূটনীতিকের স্বাগত অনুষ্ঠান ছিল বুধবার। এদিন নিজের বক্তব্যে চিন ও ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন জু উই। সীমান্ত সংক্রান্ত চিন-ভারতের দ্বান্দ্বিক সংঘাত এড়িয়ে ভারতীয় সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে ‘নমস্তে’ বলে বক্তব্য শুরু করেন চিনা রাষ্ট্রদূত।
জু উই জানান, শিল্প ও সংস্কৃতির শহর কলকাতায় চিনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হতে পেরে সম্মানিত বোধ করছেন। কলকাতায় চিনের ষষ্ঠ রাষ্ট্রদূতের ভাষণে ছিল পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা তথা বন্ধুত্বের সুর। প্রতিবেশী চিন ও ভারতকে মানব সভ্যতার দুই গর্ব হিসেবে চিহ্নিত করেন জু উই। তিনি বলেন, “আমরা দুটি বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ। প্রধান উদীয়মান অর্থনীতি। উভয়ই জাতীয় উন্নয়ন এবং পুনরুজ্জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছি।” আরও বলেন, “চিন-ভারতের সুদৃঢ় এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক উভয় দেশের স্বার্থ, অঞ্চলিক, বিশ্বশান্তি এবং উন্নয়নের জন্য সহায়ক।”
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে সরব আমেরিকা থেকে ভারত। লাদাখ সীমান্তে অতিসক্রিয়তা নিয়েও বারবার অভিযোগ উঠেছে। যদিও এদিন চিনা রাষ্ট্রদূতের মুখে শোনা গেল সৌজন্য ও শান্তির বার্তা। নিজের ভাষণে জু উই বলেন, চিন এখন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ইঞ্জিন হিসাবে কাজ করছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশে ব্যবসা এবং কাজের সুযোগ বাড়ছে। সভ্যতা, বিশ্বগ্রাম এবং বিশ্ব মানবিকতা নিয়ে বলতে গিয়ে উপনিষদ থেকেও উদ্ধৃতি দেন চিন রাষ্ট্রদূত। বলেন, উপনিষদে বলা হয়েছে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’, অর্থাৎ ‘গোটা পৃথিবী একটা পরিবার’। প্রধানমন্ত্রী মোদি যেকথা বারবার উল্লেখ করেন।
জু উই উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিককালে চিন ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরাল হয়েছে। ২০২৩ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১৩৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। চলতি বছরটি যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন সফরের শতবর্ষ সেকথাও উল্লেখ করেন বেজিংয়ের রাষ্ট্রদূত। তিনি আরও বলেন, আমার কাঁধে যে গুরুত্বপূর্ণ এবং গৌরবময় মিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত। ভারতীয় সংস্কৃতিকে সম্মানে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে নিজের বক্তব্য শেষ করেন জু উই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.