ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরুক, তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের চেষ্টার অন্ত ছিল না। বার বার জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কিন্তু সুরাহা মেলেনি। নবান্নের তরফে বার বার আলোচনার টেবিলে ডেকেও লাভ হয়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের এই অনড় মনোভাবে এবার কার্যত হতাশা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বললেন, ”ওরা বিচার চায় না, ওরা চেয়ার চায়। আমি মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতেও রাজি। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার আমার চাই না। কিন্তু তিলোত্তমা বিচার পাক।”
তিনি জননেত্রী, জনতার স্বার্থই তাঁর স্বার্থ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এসব কথা নতুন করে বলার নেই। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে জোড়া চাপ কীভাবে সামলাবেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান, তা নিয়ে ইতিমধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। একদিকে আর জি করের নির্যাতিতার সুবিচারের দাবি, অন্যদিকে এই কারণেই জুনিয়র চিকিৎসকদের অনন্ত কর্মবিরতি – দুটি বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতরতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে। সেই রাস্তা খুঁজতে নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের ডেকে কথা বলে, তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা শুনে কাজে ফেরার আবেদন জানাতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনদিন ধরে নবান্নে অপেক্ষার পরও সেই সমাধান মিলল না। লাইভ স্ট্রিমিং না হলে কিছুতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজি নন আন্দোলনকারীরা।
এই মুহূর্তে রাজ্য প্রশাসনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির পথ থেকে সরিয়ে চিকিৎসা পরিষেবায় ফিরিয়ে আনে। আর সেই কাজ কতটা কঠিন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বোঝা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অপেক্ষার পরও খোলা মনে আলোচনার রাস্তায় আন্দোলনকারীরা না হাঁটায় কার্যত হতাশ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, চাইলে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি, কিন্তু সবচেয়ে জরুরি বিচার পাওয়া। ‘তিলোত্তমা বিচার পাক’, সেকথা মনে করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমাদের সরকারকে অনেক অসম্মান করা হচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় অনেক কুৎসা, অপপ্রচার হয়েছে। মানুষ তিলোত্তমার বিচার চাইতে এসেছে। আশা করি মানুষ বুঝতে পারছেন ওরা বিচার চায় না। ওরা চায় চেয়ার। আমি মানুষের স্বার্থে পদত্যাগ করতে রাজি আছি। আমার মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাই না। আমি চাই তিলোত্তমার বিচার পাক। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাক।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জননেত্রীই বোধহয় অকম্পিত গলায়, সাহসের সঙ্গে এভাবে পদত্যাগের কথা বলতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.