অর্ণব আইচ: কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে দময়ন্তী সেনের নেতৃত্বে সিট গঠনের পর রসিকা জৈন হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। গ্রেপ্তার নিহত ব্যবসায়ী পরিবারের বধূর স্বামী কুশল আগরওয়াল। বুধবার রাতে আলিপুরে নিজের বাড়ি থেকে পাকড়াও করা হয় তাকে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে তোলা হবে আদালতে। গ্রেপ্তারি এড়াতে কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও জামিনের আবেদন জানায় কুশল। তবে তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
বিয়ের এক বছর সাত দিনের মধ্যেই গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি বাড়ির নিচ থেকে উদ্ধার হয় শিল্পপতি কুশল আগরওয়ালের স্ত্রী রসিকা জৈনের (Rasika Jain) দেহ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই বধূ। তবে মৃত রসিকার মা ও বাবার অভিযোগের আঙুল তাঁর জামাই ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। রসিকার বাবা রাজা সন্তোষ রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মহেন্দ্রকুমার জৈন জানিয়েছিলেন, মেয়ে রসিকার সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল কুশলের। কিন্তু সংসার সুখের হয়নি। জৈন পরিবারের অভিযোগ, বিভিন্ন ধরনের নেশা করতেন কুশল। তাতে আপত্তি ছিল রসিকার। তাঁর উপর অত্যাচার চালাতেন জামাই। গত নভেম্বরে অশান্তি মিটমাট করার জন্য রসিকার মা, বাবা ও অন্যরা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যান। কিন্তু আগরওয়াল পরিবার তাঁদের ফিরিয়ে দেয়।
অভিযোগ ছিল, এরপরও অত্যাচার থামেনি। গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি রসিকা তাঁর মা সঙ্গীতা জৈনের মোবাইলে একটি মেসেজ পাঠান। মেয়ে যে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে পারছেন না, সেই ইঙ্গিত মেসেজে ছিল। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মেয়ের শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে ফোন করে তাঁদের বলা হয় যে, দুপুর আড়াইটে নাগাদ রসিকা ডি এল খান রোডের বাড়ির চারতলা থেকে কোনওভাবে পড়ে গিয়েছেন। বাড়ির প্রত্যেকে হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসা চলাকালীন রাত ৯টা ৩৫ মিনিট নাগাদ হাসপাতালে রসিকার মৃত্যু হয়।
২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মেয়ের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করে জৈন পরিবার। তারপর থেকে ওই ঘটনা নিয়ে কোনও পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়েনি। তদন্ত শুরু হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন রসিকার পরিবারের লোকজন। এরপর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের নির্দেশে আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের সিট গঠন হয়। তদন্তভার নেওয়ার মাসখানেকের মধ্যেই গ্রেপ্তার রসিকার স্বামী। গ্রেপ্তারি এড়াতে কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও জামিনের আবেদন জানায় কুশল। তবে তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.