অর্ণব আইচ: চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে এক-দু’কোটি নয়, ১৬ কোটি টাকা তুলেছিলেন বাগদার ‘সৎ রঞ্জন’। আর এই টাকা তুলতে এজেন্টদের ব্যবহার করেছিলেন ‘সৎ রঞ্জন’ ওরফে বাগদার চন্দন মণ্ডল, দাবি সিবিআইয়ের। নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম কিংপিন ‘সৎ রঞ্জন’-কে মঙ্গলবার ফের আলিপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হচ্ছে। তিনি একা নন, এজেন্ট সুব্রত সামন্ত রায়কেও আদালতে পেশ করা হচ্ছে।
নিয়োগের নামে শুধু টাকা তোলা নয়, নিজের মেয়ে ও ভাইঝিকেও চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন ‘বাগদার রঞ্জন’। দুজনেই টেট পরীক্ষায় ‘অযোগ্য’ প্রার্থী হিসেবে চাকরি পান। প্রাথমিক স্কুলে তাঁরা শিক্ষিকা হিসেবে যোগদানও করেন। এদিকে ‘সৎ রঞ্জন’-এর গ্রেপ্তারির আগে ৬ কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ পেয়েছিল সিবিআই। গ্রেপ্তারির পর জেরা করে আরও ১০ কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ পেয়েছে তদন্তকারীরা। মনে করা হচ্ছে, এই সমস্ত তথ্যই এদিন আদালতে তুলে ধরবে সিবিআই।
কীভাবে স্কুলের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী থেকে চন্দন মণ্ডল কোটিপতি হয়ে ওঠেন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই টিনের চালের বাড়ি থেকে কীভাবে চন্দন তিনতলা বাড়ি হাঁকিয়ে বসলেন, কীভাবেই বা বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে চলছে তদন্ত। এলাকা সূত্রে সিবিআইয়ের কাছে এসেছে খবর, প্রায় হাজার দেড়েক প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন চন্দন মণ্ডল। তাঁকে ক্রমাগত জেরা করে সেই তথ্যই খতিয়ে দেখছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকের চাকরি থেকে শুরু করে, স্কুলের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, যার যেরকম চাকরি চাহিদা, সেরকমই মেটাতেন ‘সৎ রঞ্জন’। তার জন্য রেট বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থা বুঝে চলে দর কষাকষি। তবুও গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগের জন্য চন্দন মণ্ডলের রেট ছিল প্রার্থী পিছু ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ছিল ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য দিতে হত ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.