সন্দীপ চক্রবর্তী: আবারও সংঘাত তুঙ্গে নবান্ন ও রাজভবনের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র হেনস্তার ঘটনা ঘিরে ফের প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক দ্বন্দ্বে সরগরম রাজ্য। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে একদল পড়ুয়ার হাতে তিনি আটক হওয়ার পর তাঁকে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি যাওয়ার আগেই রাজভবনের তরফে বিবৃতি জারি করা হয়েছিল। রাজ্যপালের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, সরকারকে না জানিয়ে ধনকড় চলে গিয়েছিলেন যাদবপুরে। সরকারকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সময় দেওয়া হয়নি। এই আচরণ সাংবিধানিক প্রধানের মতো একেবারেই নয়।
শুক্রবার বেলা একটু বাড়তেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের পালটা দিয়ে রাজভবন থেকে জারি হল দ্বিতীয় বিবৃতি। তাতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে পালটা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। বিবৃতি উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যপাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন। তারপরও সমস্যা সমাধান নিয়ে কোনও ইতিবাচক ইঙ্গিত তিনি পাননি। এরপর মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে কথা বলে তিনি যাদবপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, তৃণমূলের মহাসচিব প্রকৃত ঘটনা না জেনেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। এর আগেও তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। বাম আমলেও এই মতানৈক্য ছিল। সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতভেদ হয়েছিল, তা বেশ চর্চার বিষয়ও হয়ে উঠেছিল। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর একাধিক ইস্যুতে বারবার সংঘাত ঘটেছে রাজভবনের সঙ্গে। মাসখানেক হল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে এখানে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন আইনজীবী জগদীপ ধনকড়। খুব কম সময়ের মধ্যেই তিনি যেভাবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ালেন, তা কিছুটা বিরল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হেনস্তার জল অনেক দূর গড়াবে, সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.